ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবে এই ৬ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের জীবনযাপনের ধরন দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তা এমন একটি জীবনধারায় পরিণত হয়েছে যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাজুক। আমাদের জীবনযাপনের প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্যেও। ফলস্বরূপ ডায়াবেটিস ছড়িয়ে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। শুধু আমাদের দেশেই নয়, পুরো বিশ্বে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময়ের কোনো চিকিৎসা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনে এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জেনে নিন এমন ৬টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস সম্পর্কে যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী-
ওজন কমানো
ভারতীয় চিকিৎসক ডাঃ সুশ্রুত পাউনিকার বলেন, ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, শরীরের ওজনের ৭% কমও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৬০% কমিয়ে দিতে পারে। কারণ অতিরিক্ত ওজন রক্তে শর্করার মাত্রায় ইনসুলিন প্রতিরোধ এবং ভারসাম্যহীনতায় অবদান রাখে।’
নিয়মিত চেকআপ
ডায়াবেটিস প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত চেকআপ অপরিহার্য। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রুটিন স্ক্রিনিংয়ের পরামর্শ দেয়। এই চেকআপগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিরীক্ষণ করতে, ঝুঁকির কারণগুলো সনাক্ত করতে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা প্রদান করতে চিকিৎসকদের সাহায্য করে।
ধূমপান ত্যাগ করা
ধূমপান শুধুমাত্র সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না বরং ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। ধূমপান ইনসুলিন প্রতিরোধে অবদান রাখে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা আরও চ্যালেঞ্জিং করে তোলে। ধূমপান ত্যাগ করলে তা ধীরে ধীরে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
পানি পান করা
প্রয়োজনীয় পানীয় হিসাবে পানি বেছে নিন। এটি আপনাকে চিনি, প্রিজারভেটিভ এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় উপাদান বোঝাই পানীয় এড়াতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ না করে বা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত না করেই পানি আপনাকে হাইড্রেটেড রাখে। এটি চিনিযুক্ত পানীয়র একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় খেলে তা ওজন এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস ডায়াবেটিস প্রতিরোধে উপকারী। ফাইবার চিনির শোষণকে ধীর করে দেয়, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি রোধ করে। এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। ফলমূল, শাকসবজি, দানা শস্য জাতীয় খাবার ফাইবারের চমৎকার উৎস।
চিনি এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট পরিমিত গ্রহণ
চিনি এবং পরিশ্রুত কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার উচ্চ গ্লুকোজ এবং ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। চিনিযুক্ত পানীয়, ডেজার্ট, প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাকস এবং পরিশোধিত শস্য খাওয়া কমিয়ে আনুন। এর পরিবর্তে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং জটিল কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে এমন পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করুন।