দুপুরের ঘুম উপকারী, বলছে গবেষণা
ঘুমের সময় মূলত রাত। সারাদিনের কাজের শেষে রাতের সময়টা বিশ্রাম নেওয়ার। ঘুম মানে অলসতা নয়। বরং পর্যাপ্ত ঘুম পরের দিনের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। ঘুমে কোনোরকম ব্যাঘ্যাত ঘটলে তা কাজে মনোযোগী হতে দেয় না, মাথা ব্যথাসহ আরও অনেক অসুখের কারণ হতে পারে। রাতের ঘুম কতটা উপকারী সে সম্পর্কে তো জানেন অনেকেই, কিন্তু দুপুরের ঘুম সম্পর্কে জানা আছে কি?
দুপুরের ঘুমকে অলসতা বলে মনে করেন অনেকে। খুব বেশি ক্লান্ত বা অসুস্থ হলে মানুষ দুপুরে ঘুমান, এমনটাই ধারণা অনেকের। তবে যারা বাড়িতে থাকার সুযোগ পান, দুপুরের ঘুম তাদের কাছে বেশ আরামের। দুপুরের খাবারের পরে কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে নেওয়া। এই ঘুম রাতের ঘুমের মতো দীর্ঘ হয় না। এই ঘুম কি উপকারী না অপকারী তা নিয়ে নানাজনের নানা ধারণা। ব্যস্ত জীবনে অনেকেরই সুযোগ হয় না দুপুরে ঘুমানোর। আবার যারা সুযোগ পান তাদের জন্য এটি কি উপকার বয়ে আনে? এমন অনেক প্রশ্ন আসতে পারে মনে। আমাদের সুস্থতার জন্য কি দুপুরের ঘুমের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?
গবেষণায় দেখা গেছে, ষাট কিংবা এর আশেপাশে যাদের বয়স তাদের জন্য দুপুরে অন্তত দুই ঘণ্টা ঘুম খুবই দরকারি। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য বেশি ভালো থাকবে। বয়স বাড়লে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি দেখা দিতে পারে মানসিক নানা অসুখও। বয়স বাড়লে মানুষ অনেকটা শিশুর মতো হয়ে যায়। তাদের মস্তিষ্ক তখন আগের মতো কার্যকরী থাকে না। তাই বয়স্কদের শরীরের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিতে হবে মানসিক যত্নও। ষাটের ওপরে যাদের বয়স, তাদের মধ্যে যারা দুপুরে ঘুমান এবং যারা ঘুমান না তাদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, দুপুরে যারা ঘুমান তারা মানসিকভাবে বেশি সুস্থ। অপরদিকে দুপুরে না ঘুমানো ব্যক্তিরা ভুগছেন নানা অসুস্থতায়।
সমীক্ষা করা হয়েছে ২২১৪ জনের মধ্যে। তাদের প্রতিদিনের অভ্যাস ও শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করেই মিলেছে গবেষণার ফল। পরিসংখ্যান বলছে, ১৫৩৪ জনের মধ্যে দুপুরে না ঘুমানোর দলে রয়েছেন ৬৮০ জন। দুপুরে ঘুমান এবং দুপুরে ঘুমান না, এই দুই পক্ষই রাতে গড়ে সাড়ে ছয় ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকেন। যারা দুপুরে ঘুমের সুযোগ পাচ্ছেন না, তাদের মস্তিষ্ক বিশ্রাম নেওয়ার সময় পাচ্ছে কম। এর ফলে দীর্ঘ ক্লান্তি, অবসাদ, কোনোকিছু ভালো না লাগার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে। তবে খেয়াল রাখবেন, দুপুরের ঘুম যেন কোনোভাবেই দুই ঘণ্টার বেশি দীর্ঘ না হয়। দুপুরে দুই ঘণ্টার বেশি ঘুমালে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে, এমনটাই বলছেন গবেষকেরা।
জি নিউজ অবলম্বনে এইচএন/এএ/এমএমজে