ওজনের ভয়ে এই ৫ খাবার এড়িয়ে চলেন? জেনে নিন কী ভুল করছেন
ওজন কমাতে চাচ্ছেন এমন বেশিরভাগ মানুষই কিছু খাবার প্রতিদিনের তালিকা থেকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেন। অনেকে পুরোপুরি বাদ দিতে না পারলেও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। এর কারণ হিসেবে বলা হয় যে সেসব খাবার ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। স্বাস্থ্যকর ও কার্যকর উপায়ে ওজন কমানোর জন্য কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি। আমাদের শরীরের জন্য সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাক্রো এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসহ সুষম খাদ্য প্রয়োজন। এসব পুষ্টি বিভিন্ন ধরণের খাবার থেকে আসে, এমনকী এক্ষেত্রে ফ্যাট হিসেবে পরিচিত খাবারও গুরুত্বপূর্ণ।
ওজন কমানোর জন্য কিছু খাবার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে কোন খাবারগুলোর নাম আগে মনে আসে? আলু? ভাত? আপনার ওজন কমানোর ডায়েটে এসব খাবার রাখতে পারেন। ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান আকাঙ্কা জে শারদার মতে, সাধারণ স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয়কে আমরা ওজন কমানোর জন্য খারাপ বলে মনে করি, আসলে তা নয়। আমাতের শরীরের প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টির প্রয়োজন, এমনকি ওজন কমানোর জন্যও, তাই যতক্ষণ সুস্থ আছেন ততক্ষণ আপনার প্রিয় খাবার খেতে থাকুন। এই ডায়েটিশিয়ান তার ইনস্টাগ্রাম পেজে এই জাতীয় খাবারের একটি তালিকা শেয়ার করেছেন। জেনে নিন-
আলু
এটা সত্যি যে আলুতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট এবং স্টার্চ রয়েছে, তবে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ভিটামিন সি এবং প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ। যা খাবার সহজে হজম করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) অনুসারে, ১০০ গ্রাম আলুতে ২ গ্রাম ফাইবার এবং ২ গ্রাম প্রোটিন থাকে এবং এটি কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার। প্রোটিনের উপস্থিতি থাকার কারণে আলু খেলে ওজন কমানো সহজ হয়। আলুর স্টার্চ বাদ দেওয়ার জন্য সেদ্ধ করে কম তেলে রান্না করে খেতে পারেন। এছাড়াও এটি অন্যান্য স্বাস্থ্যকর মাঝারি কার্ব-সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গেও খেতে পারেন।
ভাত
আলুর মতো ভাতেও প্রচুর কার্বোহাইড্রেট এবং স্টার্চ থাকে তবে এটি হজম করা সহজ, তাই এটি চর্বি জমতে বাধা দেয়। প্রতিদিন এক কাপ রান্না করা ভাত খেতে পারেন, এটি ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে না। আরেকটি ভালো অভ্যাস হলো চাল সেদ্ধ করে ভাত রান্না জলে এর স্টার্চ বাদ দেওয়ার জন্য পানি অর্থাৎ ভাতের মাড় ফেলে দেওয়া।
প্রোটিন ড্রিংক
প্রোটিন স্মুদি সাধারণত ওজন বাড়ানোর জন্য দায়ী হিসাবে বিবেচিত হয়। আপনি নিশ্চয়ই জিম করেন এমন যে কাউকে পেশী লাভের জন্য প্রোটিন স্মুদি পান করতে দেখেছেন? এটি ঠিক যে পেশী বৃদ্ধি এবং ওজন বৃদ্ধি এক কথা নয়। ঘরে তৈরি প্রোটিন স্মুদি ওয়ার্কআউটের পরে আপনার শরীরকে শক্তিশালী করার একটি ভালো উপায়। এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে যে কারণে দ্বিগুণ খাওয়া রোধ কো সম্ভব হয়। তাই ওজন কমানোর জন্য প্রোটিন ড্রিংক বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
ডিম
ডিম, বিশেষ করে ডিমের কুসুম বেশিরভাগ মানুষ এড়িয়ে চলেন। এর কারণ হিসেবে তারা মোটা হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। আপনি কি জানেন যে, কেবল কুসুম ডিমের ৯০ শতাংশ ক্যালসিয়াম বহন করে? সেইসঙ্গে এটি প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি৩ সমৃদ্ধ। তাই, ডিম সত্যিই শরীরের জন্য একটি ভালো খাবার। ওজন কমানোর অংশ হিসেবে কখনো ডিম বাদ দেবেন না।
ওটস
ওটস ফাইবার সমৃদ্ধ, যা ওজন কমানোর জন্য দুর্দান্ত। তবে এই শস্যটিতে কার্বোহাইড্রেটও বেশি থাকে, যে কারণে ওটস খেলে ওজন বৃদ্ধির ভয় থাকতে পারে এমনটা মনে করেন অনেকে। পুষ্টিবিদ এই মিথটি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন যে ওটস ওজন বাড়ায় না। এতে স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা প্রকৃতপক্ষে ওজন কমাতে কাজ করে। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেটসহ সমস্ত পুষ্টি ওজন কমানোর জন্য ভালো, যদি পরিমিতভাবে খাওয়া হয়।