ঈদের তিন বেলার সাজ
সাজ-পোশাক ছাড়া ঈদ পূর্ণ হয় না যেন। ঈদের দিন সবাই সেজেগুজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যায়, বন্ধু কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যায়। স্বাভাবিকভাবেই সবাই সবার নতুন পোশাক আর সাজ খেয়াল করে দেখে। বাহারি রঙের সাজ-পোশাকে ঈদ বর্ণিল হয়ে ওঠে। ঈদের সাজ-পোশাক কেমন হবে, তা সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে আপনি কোন অঞ্চলে আছেন, সেই অঞ্চলের আবহাওয়া কেমন, সংস্কৃতি কেমন তার ওপর। এমন অনেক পোশাক আছে, যা শহরে পরা গেলেও গ্রামে পরাটা বেমানান কিংবা অন্য কোনো দেশে পরা গেলেও তা বাংলাদেশে পরার উপযোগী নয়। আবার শীতের সময় সাজ-পোশাক একরকম হয়, গরমের সময় অন্যরকম। আপাদমস্তক ভিন্নতা না থাকলেও আবহাওয়া ভেদে আপনাআপনি কিছু পার্থক্য চলে আসে। ঈদের দিনের সাজকে আমরা তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি- সকালের সাজ, দুপুরের সাজ এবং রাতের সাজ।
সকালের সাজ
ঈদের দিন সবাই সাধারণত ভোরবেলাতেই ঘুম থেকে ওঠে। তখন গরম কম থাকে। কেউ যদি শুধু সকালের সময়টুকুর সাজতে চায়, তাহলে তখন কিছুটা গর্জিয়াস পোশাক পরলেও সমস্যা হবে না। কিন্তু একই সাজে যদি দুপুর পর্যন্ত থাকার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে অবশ্যই কিছুটা আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে। সুতি কিংবা যেকোনো নরম কাপড় হলে ভালো হয়। থ্রিপিস, কুর্তি কিংবা আরামদায়ক কোনো শাড়ি পরা যেতে পারে। আর সকালের সাজটাও সকালের মতো স্নিগ্ধ সুন্দর হওয়া চাই। খুব বেশি জমকালো সাজও নয়, আবার একদম হালকা সাজও নয়, ঈদ উৎসবের সঙ্গে মানানসই সাজ দেয়া যেতে পারে। সকালে যেহেতু গরম থাকবে না তেমন, তাই চুল খোলা রাখা যেতে পারে।
দুপুরের সাজ
দুপুরের সাজ সাধারণত বিকেল পর্যন্ত ক্যারি করা হয়। এদিকে গরমের দিন ঈদ হবার কারণে দুপুরের আবহাওয়া সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত থাকবে, তাই অবশ্যই হালকা পোশাক পরতে হবে। যেসব রঙের পোশাকে গরম কম লাগে, সেসব রঙের পোশাক পরতে হবে। ভারী পোশাক পরলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে যেতে হবে। সাজতেও হবে হালকাভাবে। ফেইস টোনের সাথে মিল রেখে ফাউন্ডেশন, ফেইস পাউডার ব্যবহার করতে হবে। হালকা রঙের ব্লাসন ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখে কাজল পরলে হালকা সাজে সুন্দর লাগবে। লিপিস্টিকটা গাঢ় রঙের ব্যবহার করা যেতে পারে, আবার হালকা রং হলেও মানানসই হবে। সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে, যদি রোদের তাপ বেশি থাকে। চুল এমনভাবে বাঁধতে হবে, যেন গরম না লাগে। চাইলে খোঁপা করে ফুলও গুঁজে দেয়া যেতে পারে।
রাতের সাজ
রাতের বেলা হালকা গরম থাকলেও রোদের ঝামেলা নেই। তাই ঈদ উৎসবে রাতের সাজটা সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় কিংবা জমকালো করা যেতে পারে। ভারী কোনো পোশাক পরা যেতে পারে। যেমন- লেহেঙ্গা, গর্জিয়াস শাড়ি কিংবা অন্য যেকোনো ভারী কাজের পোশাক। রাতের মেকআপটা একদম আয়েশ করে করা যেতে পারে। স্কিন টোনের সাথে মিলিয়ে মেকআপের সবগুলো উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে, যার যার প্রয়োজনমতো। উজ্জ্বল ব্লাসন, গাঢ় কিংবা হালকা রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করা যাবে। সাজপোশাকের সঙ্গে মানানসই হেয়ারস্টাইল করলে আরো দারুণ লাগবে।
সাজপোশাক ব্যপারটি মেয়েদের জন্য যতটা বিস্তৃত পরিসরে আছে, ছেলেদের জন্য ততটা নেই। ঈদের দিন সকালে ছেলেরা সাধারণত পাঞ্জাবিই পরে। আরামদায়ক পাঞ্জাবি পরিধান করা যেতে পারে সকালে বা বিকেলে। সঙ্গে আতর, পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারে। শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট দুপুরে এবং বিকেলে পরা যেতে পারে। তবে যেটাই পরা হোক না কেন খেয়াল রাখতে হবে তা যেন আরামদায়ক হয়, গরম কম লাগে।
ঈদের সাজ অবশ্যই সবার মনমতো হওয়া চাই, নাহলে ঈদের আনন্দ অনেকটা ম্লান হয়ে যায়। তাই সাজপোশাকের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক এবং যত্নবান হতে হবে। সবার ঈদ রঙিন হয়ে উঠুক।