শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়বে আপনার যে কাজগুলো
শিশুকে সুস্থ, শক্তিশালী ও একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়তে যত্নশীল হতে হবে অভিভাবককেই। কারণ শিশু নিজের যত্ন নিজে নিতে পারে না। ছোটবেলা থেকে ভালো অভ্যাস গড়ে তুললে তা শিশুর ভবিষ্যতের জন্য উপকার বয়ে আনবে। শিশুর সুস্থতা ও সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। সেসব অভ্যাস গড়ে তুললে দীর্ঘমেয়াদে অনেক উপকার পাওয়া সম্ভব হবে। জেনে নিন শিশুকে কোন অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে সাহায্য করবেন-
শিশুকে খেলাধুলার প্রতি উৎসাহ দিন
শিশুর বয়সটাই হলো খেলাধুলার জন্য। এসময় তাকে জোর করে বসিয়ে রাখবেন না। তার হাতে বিভিন্ন ডিভাইস তুলে না দিয়ে হাঁটাচলা, দৌড়ানোর মতো কাজে উৎসাহ দিন। তাকে ঘরের বাইরে খেলাধুলা করার ব্যবস্থা করে দিন। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, সুস্থ থাকার জন্য একজন শিশুকে দিনে অন্তত ৬০ মিনিট শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। এর সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হতে পারে খেলাধুলা। শিশুকে এমন খেলাধুলায় উৎসাহ দিন যাতে তার শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। শিশু শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকলে পরবর্তীতে তার উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। শিশুকে সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন দৌড়ানো বা খেলাধুলা করার মতো পরিবেশ দিন।
শিশুকে নিয়ে কেনাকাটা করুন
কেনাকাটা করার দক্ষতা থাকা জরুরি। অনেকে মনে করেন, শিশুদের আর্থিক বিষয় থেকে দূরে রাখা ভালো। কিন্তু তার সঙ্গে অর্থ-সংক্রান্ত কিছু কিছু আলোচনা করা উচিত। এটি তাদের কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় আর্থিকভাবে শক্তিশালী হতে সাহায্য করবে। শিশুকে ছোট ছোট জিনিস কিনে আনতে বলুন। এতে তারা লেনদেনের বিষয়টি সহজেই শিখতে পারবে। কেনাকাটা করতে যাওয়ার সময় সম্ভব হলে শিশুকেও সঙ্গে রাখবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মনোপলির মতো গেম খেললেও শিশুর বুদ্ধি ভালো হয়। এর মাধ্যমে সে অর্থ-সম্পর্কিত প্রাথমিক নিয়মগুলো বুঝতে শেখে।
শিশুকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ান
শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই মুখরোচক সব খাবার খেতে চাইবে। তাকে চিপস, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো খাবার না দিয়ে এর বদলে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে শেখান। খাবার নিয়ে জোরাজুরি করবেন না। খাবারের প্রতি শিশুর আগ্রহ জন্মানোর জন্য তাকে বাজারে নিয়ে যেতে পারেন। শাক-সবজি, মাছ-মাংস, ফল ইত্যাদি বেছে বেছে কিনতে শেখান। এর পাশাপাশি খাবার তৈরিতেও তাদের সাহায্য নিতে পারেন। তৃষ্ণা পেলে তাকে বিশুদ্ধ পানি খেতে দিন, প্যাকেটের জুস বা কোল্ড ড্রিংকস নয়। তাজা ফলের রস, ডাবের পানি এ জাতীয় পানীয় খেতে দিন। শিশুকে সব সময় রঙিন খাবারের প্রতি উৎসাহী করুন। তাকে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফলমূল খেতে দিন। শিশুর পাশাপাশি নিজেদেরও একই অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ শিশুরা আপনাদের দেখেই শিখবে।
তাকে বই পড়া শেখান
ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার যুগে অনেকেই বই পড়ার অভ্যাস ভুলতে শুরু করেছে। কিন্তু শিশুর মেধা বিকাশ থেকে শুরু করে ব্যক্তিত্ব গঠন, সবকিছুতেই ভূমিকা রাখতে পারে বই পড়ার অভ্যাস। তাই শিশুকে বিভিন্ন ধরনের বই পড়া শেখান। এই অভ্যাস শিশুর শব্দভাণ্ডার, ভাষার দক্ষতা, একাগ্রতা এবং কল্পনার বিকাশে সহায়তা করে। বিভিন্ন ধরনের বই পড়লে শিশুর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠবে এবং সে সহজেই অন্যদের অনুভূতি বুঝতে শিখবে। শিশুকে তাই ভালো বই পড়তে দিন।