শিশু সারাক্ষণ মোবাইল দেখে? চোখ ভালো রাখতে যা করবেন
বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুর শৈশব কাটে ফ্ল্যাটবন্দী হয়ে। খোলা মাঠ কিংবা বাড়ির আঙিনায় খেলার স্মৃতি তাদের গড়ে উঠছে না। শিশুরা দুরন্ত। কিন্তু তাদের আটকে থাকতে হচ্ছে মাত্র দুই-তিন কামরার ঘরে। তারা খুব বেশি সঙ্গ পাচ্ছে না। মা-বাবার ব্যস্ত জীবনের সঙ্গে তাল মেলানোর বয়স তাদের এখনও হয়নি। তাই অল্পতেই শিশুরা হয়ে উঠছে খিটখিটে মেজাজের। এদিকে শিশুকে সামলাতে গিয়ে যখন-তখন তার হাতে মোবাইল ফোন ধরিয়ে দিচ্ছেন অধিকাংশ অভিভাবক।
সময় কাটানোর মাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন বা মোবাইলকে বেছে নিচ্ছে বেশিরভাগ শিশু। এতে মা-বাবার সাময়িক স্বস্তি মিললেও একটা সময় শিশুর জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ টেলিভিশন ও মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে শিশুর চোখে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে দ্রুতই। খেয়াল করলে দেখবেন, আজকাল বেশিরভাগ শিশুর চোখেই চশমা। কারণ খুব কম বয়সেই তাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
এক গবেষণা অনুসারে, ২ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশু প্রতিদিন গড়ে ২ ঘণ্টা ৭ মিনিট স্ক্রিনটাইমে ব্যয় করে। আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স অনুসারে, যেসব শিশুর বয়স ২ বছরেরও কম, তাদের টিভি বা ফোনের স্ক্রিনে অভ্যস্ত কোনোভাবেই উচিত নয়। আপনার শিশুরও যদি একই অভ্যাস থাকে, তবে সেখান থেকে যতটা সম্ভব সরিয়ে আনার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি তাদের চোখ ও কানের যত্ন নিতে হবে।
বড় পর্দা নির্বাচন
শিশু কয়েক মিনিটের বেশি সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে স্ক্রিনের আকার চোখের উপর প্রভাব ফেলে। তাই স্ক্রিনে ছবি যত বড় হবে, তার চোখের ওপর চাপ তত কম পড়বে। শিশু যদি কোনো সিনেমা বা প্রোগ্রাম দেখে, তাহলে ফোন বা ট্যাবলেটের পরিবর্তে টিভির পর্দায় দেখতে দিন। তবে কেবল পর্দার আকার পরিবর্তন হলেই যে শিশুর চোখ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে, এমনটা ভাববেন না। ছোট পর্দার তুলনায় বড় পর্দা নির্বাচন করলে চোখের ওপর চাপ কিছুটা কমবে।
পলক ফেলার অভ্যাস
দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, একটানা দীর্ঘ সময় টিভি বা মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে কিছু সময়ের জন্য দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। তাই টিভি বা গ্যাজেট ব্যবহার করার সময় কিছুক্ষণ পরপর আপনার শিশুর চোখের পাতায় একবার করে হাত বুলিয়ে দিন। শিশুর ড্রাই আইয়ের সমস্যা বাড়তে থাকলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শে নিয়ে ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।
শিশু হেডফোন ব্যবহার করতে পারবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে শিশুর বয়স তিন বছরের কম, তাকে কখনো হেডফোন ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়। এর থেকে বেশি বয়সের শিশু হেডফোন ব্যবহার করলে ভলিউম কমিয়ে তারপর দিন। ডিভাইসের ভলিউম লেভেল ৫০% বা তার কম রাখা উচিত। এতে শিশুর কানের ক্ষতি হওয়ার ভয় অনেকটাই কমবে।
এইসময় অবলম্বনে