রোজা রেখে যে ৫ কাজ করবেন না
রমজানের রুটিন বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে আলাদা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এসময় সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকেন। যেহেতু দিনের বড় একটি সময় আমরা খাবার তৈরি ও খাওয়ার পেছনে ব্যয় করি তাই রমজান মাসে এসে সেই রুটিনে পরিবর্তন ঘটে। সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে এসময় শরীর কিছুটা দুর্বল হওয়া স্বাভাবিক। রোজা রেখে অনেকে না বুঝেই কিছু কাজ করেন যেগুলো আসলে শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিজেকে সুস্থ রাখতে রোজা রেখে কোন ৫ কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন-
শরীরচর্চা
শরীরচর্চা করা শরীরের জন্য উপকারী ও প্রয়োজনীয়। তবে রোজা রেখে শরীরচর্চা করবেন না। কারণ শরীরচর্চার ফলে আমাদের শরীর থেকে ঘাম বেরিয়ে যায়। যে কারণে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শরীরচর্চার পর তাই বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর পানীয় পানের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু রোজা রেখে যেহেতু কোনোকিছু খাওয়া সম্ভব নয় তাই এসময় শরীরচর্চা এড়িয়ে যেতে হবে। নয়তো শরীর আরও বেশি ক্লান্ত হয়ে যাবে। তখন রোজা রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। এমনকী আপনি অসুস্থও হয়ে পড়তে পারেন।
দীর্ঘ সময় ধরে রান্না
রোজা রেখে এই কাজ অনেকেই করে থাকেন। বিশেষ করে নারীরা। ইফতার ও সাহরির আয়োজন নিয়ে তারা তুমুল ব্যস্ত থাকেন। বাহারি পদের ইফতার টেবিলে রাখতে গিয়ে তারা হয়ে পড়েন কাহিল। রোজা যেহেতু সংযমের মাস তাই খাবারের তালিকায়ও সংযম আনুন। পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর কয়েক পদ রাখুন। খাবারের অপচয় করবেন না। সেইসঙ্গে ডুবো তেলে ভাজা ও অতিরিক্ত মসলাদার খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। রোজা রেখে চুলার পাশে গরমের মধ্যে দীর্ঘ সময় কাটালে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম ঝরে আরও বেশি ক্লান্ত হয়ে যাবেন। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে রান্নার সময়টা কমিয়ে আনুন।
সারাদিন ধরে কেনাকাটা
রোজার পরে আসে খুশির ঈদ। আর ঈদ মানেই সবার জন্য কেনাকাটা। এই কেনাকাটার কাজ সারতে গিয়ে অনেকে সারাদিন ব্যয় করেন এ দোকান থেকে ও দোকানে। রোজা রাখার কারণে এমনিতেই আপনার শরীর থাকে কিছুটা দুর্বল। তারওপর এভাবে ঘোরাঘুরি করে কেনাকাটা করতে গিয়ে আরও বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়া খুবই স্বাভাবিক। তাই এসময় অতিরিক্ত কেনাকাটার অভ্যাস বাদ দিন। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই কিনুন। এভাবে ছোটাছুটি না করে আগে একটি তালিকা করে নিন। এরপর সে অনুযায়ী একটা একটা কিনে ফেলুন। রোজায় সারাদিন ধরে কেনাকাটার কাজে ব্যয় করলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
অতিরিক্ত ঘুম
অনেকে রোজা রেখে সারাদিন ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন। মনে রাখবেন, এটি কোনো ভালো অভ্যাস নয়। অতিরিক্ত ঘুমের ফলে এমনিতেই শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে। সেইসঙ্গে ধর্মীয়ভাবেও রোজা রেখে ঘুমিয়ে থাকাকে ভালোভাবে দেখা হয় না। তাই অতিরিক্ত ঘুম বাদ দিন। পর্যাপ্ত ঘুম হয়ে গেলে বাকি সময়টা অন্যান্য কাজে ব্যয় করুন। দীর্ঘ সময় ঘুমালে শরীর আরও বেশি ক্লান্ত হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন সাত-আট ঘণ্টা ঘুম যথেষ্ট।
একটানা বসে থাকা
রোজায় ক্লান্ত থাকার কারণে অনেকের ভেতরে এই অভ্যাস দেখা যায়। কোথাও বসে আছেন তো বসেই আছেন। এই অভ্যাসের কারণে শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ সময় শরীর নড়চড়া না করলে রক্ত চলাচলে সমস্যা হতে পারে। অনেকের বসার ভঙ্গীর কারণে মেরুদণ্ডে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই রোজা রেখে ক্লান্ত লাগলেও কিছুক্ষণ পরপর অল্পস্বল্প হাঁটাহাঁটি করুন। একটানা এক জায়গায় বসে থাকলেই বরং সমস্যা বাড়বে।