নতুন বছরে যে অভ্যাসগুলো বাদ দেবেন
কিছু ভুল অভ্যাস গড়ে উঠেছে বলেই যে সেগুলো মেনে চলতে হবে তা কিন্তু নয়। সবার জীবনেই কিছু না কিছু ভুল অভ্যাস গড়ে ওঠে। ভুলগুলো মেনে নিয়ে বদ অভ্যাস থেকে দূরে সরে আসতে পারলেই জীবনে সফল হওয়া সম্ভব। আপনার যাপিত জীবনের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন, কত সহজে আমরা বদ অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে উঠি। এ ধরনের অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা আসলেই কঠিন।
দাঁত দিয়ে নখ কাটা, বারবার চুলে হাত বোলানো আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মনে হলেও একটা সময় এগুলো বাদ দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এগুলো বাদেও কিছু বদ অভ্যাস আছে যা সরাসরি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে যেমন ধূমপান বা মদ্যপান। এই দুই অভ্যাস ক্যান্সার ও লিভারের অসুখের কারণ হতে পারে। এসব ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হলে সবার আগে বদ অভ্যাসগুলো বাদ দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে হবে।
দেরি করা
কিছু মানুষ প্রায় সব জায়গাতেই দেরি করে যায়। এই অভ্যাস আমাদের জীবনে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে। এরকমটা চলতে থাকলে অন্যরা আপনাকে বিশ্বাস করতে পারবে না। তারা সব সময়ই আপনার বিষয়ে হতাশ থাকবে। এর ফলে আপনি কখনোই একজন নির্ভরযোগ্য মানুষ হয়ে উঠতে পারবেন না। সময়মতো উপস্থিত না থাকার অভ্যাস আপনার জীবনকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। এই বদ অভ্যাস বাদ দেওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করা।
নিজের প্রতি কঠোর হওয়া
কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। নিজস্ব, পারিবারিক কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের কাজ হতে পারে। যদি একান্ত চেষ্টার পরেও সেটি না করতে পারেন তবে হতাশ হবেন না। নিজের ওপর বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেবেন না। কারণ এমনটা হতেই পারে। তাই ধীরে-সুস্থে পুনরায় কাজের প্রতি মনোযোগ দিন। নিজের প্রতি অভিযোগ রাখবেন না।
যারা আপনার ভালো দিকগুলোর মূল্যায়ন করে না, তাদের সঙ্গে থাকা
প্রত্যেকেই চায় যেন তার আশেপাশের মানুষ তার ভালো দিকগুলোর মূল্যায়ন করুক, প্রশংসা করুক। কিন্তু আপনার চারপাশে যদি এমন মানুষ থাকে যারা আপনার প্রশংসা করতে চায় না বা করে না, তবে তাদের এড়িয়ে চলুন। তাদের নেতিবাচক কথাবার্তা আপনার জন্য আরও ক্ষতিকর হতে পারে। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করাই হলো এই বদ অভ্যাস থেকে হয়ে আসার একমাত্র উপায়। এমন মানুষের সঙ্গ বেছে নিন যারা আপনার ভালো দিকগুলোর মূল্যায়ন করতে পারে। তাদের আন্তরিক প্রশংসা আপনাকে ভালো একজন মানুষ হতে সাহায্য করবে।
শেষ মুহূর্তে হাল ছেড়ে দেওয়া
দেরি হওয়ার চেয়েও এটি খারাপ অভ্যাস। কারণ অনেকরকম প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ফল পেতে চাইলে কিছুটা ধৈর্য থাকা লাগে। যখন আপনার মনে হবে- আর পারছেন না, তখন নিজেকে আরেকটু শক্তি জোগান। মনকে বলুন যে আমি পারবোই। একটা সময় দেখবেন কাজটি সত্যিই শেষ হয়েছে। আর আপনি পাবেন সফলতার স্বাদ। তাই প্রতিটি কাজের আগে পরিকল্পনা করে নিন। এতে কাজটি অনেকটা সহজ হবে।
নেতিবাচক বিষয়ের ওপর জোর দেয়া
যাদের শুধুমাত্র নেতিবাচক দিকে মনোনিবেশ করার অভ্যাস আছে তারা জীবনে শুধুমাত্র নেতিবাচক পরিস্থিতিরই সম্মুখীন হয়। এটি বদ অভ্যাসের একটি অন্তহীন বৃত্ত। আপনি যতই এই বদ অভ্যাস শেষ করার চেষ্টা করবেন, ততই আপনি এতে জড়িয়ে যাবেন। এটি বাদ দিতে না পারলে জীবনে ঘটে যাওয়া নেতিবাচক জিনিসগুলোর বদলে ইতিবাচক দিকগুলোর কথা ভাবুন। ধীরে ধীরে আপনার স্বভাবও ইতিবাচক হয়ে উঠবে।
মাল্টিটাস্কিং
অনেকেই আছেন যারা মাল্টিটাস্কিংকে অনেক বড় গুণ বলে মনে করেন। এটি সহজ কিছু নয়। মাল্টিটাস্কিং করতে পারলে অনেক সময় বাঁচানোও সম্ভব হয়। কিন্তু এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে আপনার মস্তিষ্কে। তাই একসঙ্গে একাধিক কাজ করা বন্ধ করুন। প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা সময় বরাদ্দ রাখুন। সাবধানে এবং দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার অভ্যাস করুন। ভুলে যাওয়ার ভয় থাকলে প্রতিদিনের কর্ম পরিকল্পনা নোট করে রাখুন।
দোষারোপ করা
নিজের দুর্ভাগ্য কিংবা ব্যর্থতার জন্য অন্যদের দোষ দেওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিন। সফল মানুষের দিকে তাকান, দেখবেন তাদের প্রচেষ্টাই তাদের সফল করেছে। তাই নিজের প্রতি মনোযোগ দিন। অন্যকে দোষ দিয়ে আত্মতৃপ্তি হয়তো পাবেন কিন্তু দিন শেষে আপনার নাম থাকবে ব্যর্থ মানুষের তালিকায়। আবার কিছু জিনিস থাকে যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই যা পাননি তার জন্য মনে আফসোস রাখবেন না।
লাইফহ্যাক অবলম্বনে