অসুখী পরিবার চিনবেন যেভাবে
টলস্টয় বলেছেন, ‘পৃথিবীর প্রতিটি সুখী পরিবার একই রকমভাবে সুখী, প্রতিটি অসুখী পরিবার নিজের মতো করে অসুখী’। সুখী পরিবারের মূল মন্ত্রই হলো বন্ধন। একে অন্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে, সুখে-দুঃখে পাশাপাশি থাকলে সেই পরিবারের মানুষগুলোই মূলত সুখী। একই পরিবারে জন্ম নেওয়ার পেছনে মূল কারণ সম্ভবত পরস্পরের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকা। কিছু দায়িত্ব পালন করা। মন খুলে মনের কথা বলতে পারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সব পরিবারে তা সম্ভব হয় না। জেনে নিন কোন লক্ষণগুলো দেখলে একটি অসুখী পরিবারকে চেনা যায়-
খারাপ ব্যবহার করা
অসুখী পরিবারের এটি একটি বড় লক্ষণ। শারীরিক ও মানসিক যেকোনো অত্যাচার বা পরস্পরের সঙ্গে খারাপ আচরণ একটি পরিবারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকুন। পরিবারের সবাইকে এ পরিস্থিতি থেকে বের করে আনার চেষ্টা করুন। বিশেজ্ঞরা বলেন, যেকোনো ধরনের খারাপ আচরণ শিশুর মনে গভীরভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রভাব থাকে দীর্ঘদিন, এমনকী তারা বড় হওয়ার পরও।
বাধা-বাধ্যকতা না থাকা
আন্দ্রে আগাসির একটি বিখ্যাত উক্তিটি আছে, ‘সম্পর্ক ছাড়া নিয়ম বিদ্রোহের সমান’। তাই পরিবারের সবার মধ্যে আগে একটি সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এরপর কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে সবাইকে নিয়ে আসতে হবে। যে নিয়ম কারও ক্ষতি করে না, সেগুলো মেনে চলতে দোষ নেই। যখন পরিবারে জন্য কল্যাণকর নিয়মগুলোও কেউ মানতে না চায়, তখন বুঝে নিতে হবে তাতে আর সুখ অবশিষ্ট নেই।
বিশ্বাস না থাকা
অনেক পরিবারে দেখা যায় শিশুরাও বড়দের মুখে মুখে তর্ক করছে! এরকম কিছু দেখলে সতর্ক হয়ে যান। কারণ এ ধরনের পরিবেশে থাকলে শিশু বড় হওয়ার পরও ভদ্রতাবোধ শেখে না। সেইসঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তৈরি হয় না বিশ্বস্ততাও। একে অন্যের অনুমতি ছাড়াই ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করা, ব্যক্তিগত জিনিস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা থাকলে সুখী পরিবার তৈরি হবে সহজেই।
পরিবারের ভেতরে দ্বন্দ্ব
ছোট ছোট কারণেই পরিবারের সদস্যদের ভেতরে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে। ছোটবেলায় যেমন খাবার বা খেলনা ভাগাভাগি নিয়ে হতে পারে, বড় হয়ে হয়তো অর্থ-সম্পত্তির ভাগাভাগির কারণে সৃষ্টি হতে পারে এমন দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বের কারণে ভেঙে যায় পারিবারিক বন্ধন। তখন পরিবারটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চাওয়া
একটা সময় আসতে পারে যখন আপনাকে কর্তৃত্বের জায়গা থেকে সরে আসতে হতে পারে। বেশিরভাগ মানুষই পরিবারের সদস্য বিশেষ করে শিশুদের ওপর নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চান। এখান থেকেও শুরু হতে পারে লড়াই। কিছু ক্ষেত্রে শাসন-বারণ থাকা ভালো। তবে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতেও জানতে হবে। নয়তো এই একগুয়ে স্বভাবের কারণে পরিবারটি অসুখী পরিবারে পরিণত হবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে