কফি খাওয়ার অপকারিতা
কফি খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে, একথা সত্যি। এটি স্বাদ, গন্ধ এবং উপকারিতার কারণে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। কফি খেলে শরীরে শক্তি মেলে, এটি কাজের স্পৃহা বাড়িয়ে দেয়। তাই কাজে বসে ঘুম পেলে অনেকেই কফি খেয়ে নেন। যত উপকারিতা থাকুক, কোনো খাবারই একবারে অনেকখানি খাওয়া ভালো নয়। কফিও তার ব্যতিক্রম নয়।
কফি খেতে পারেন, তবে প্রতিদিন কতটা কফি খাচ্ছেন সেদিকে নজর রাখতে হবে। অফিস, বাসা, বন্ধুদের আড্ডা সব মিলিয়ে দিনে অনেকটা কফি খেয়ে ফেলছেন না তো? খুঁজলে এমন অনেককে পাওয়া যাবে, যারা প্রতিদিন ৭-৮ কাপ কফি খেয়ে ফেলছেন। এভাবে অতিরিক্ত কফি খাওয়ার ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ঘুম না আসা
কফিতে থাকে ক্যাফেইন। এই উপাদান আমাদের শরীরকে উত্তেজিত করতে কাজ করে। যে কারণে ক্যাফেইন খেলে মস্তিষ্ক উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ফলে অতিরিক্ত কফি খেলে ঘুম আসতে চায় না। যে কারণে বিশেষজ্ঞরা সন্ধ্যার পর কফি খেতে নিষেধ করেন। কারণ এতে নিদ্রাহীনতার সমস্যা আরও বাড়ে। তাই কফি খেলে তা সূর্য ডোবার আগেই খান, রাতে খেয়ে সারা রাত জেগে থাকার কোনো মানে হয় না।
বাড়তে পারে পেটের সমস্যা
কফি ভালোবেসে খান, ঠিক আছে। অতিরিক্ত কফি খেয়ে পেটের বারোটা বাজাবেন না যেন! এক্ষেত্রে পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে ক্যাফেইন। আপনি যখন কফি খান তখন আপনার পেটে কিছু হরমোন বেরিয়ে আসে। এই হরমোন আপনার পেটে গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই পেটের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চাইলে সতর্ক হতে হবে কফি খাওয়ার ক্ষেত্রেও। আপনি যদি ইতিমধ্যেই এ ধরনের সমস্যা ভুগে থাকেন তবে কফি খাওয়ার পরিমাণ কমান।
হাড়ের ক্ষয় বেড়ে যায়
এটি বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত যে, যারা নিয়মিত কয়েক কাপ করে কফি খান, তাদের শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেসব সমস্যার মধ্যে একটি হলো হাড়ের ক্ষয়। মূলত ক্যাফেইনের কারণেই এই সমস্যা হতে পারে। অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত রোগীরা কফি খাওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাবেন।
ক্লান্তি দেখা দিতে পারে
ক্লান্তি কাটানোর জন্য আমরা কফি খেয়ে থাকি। কারণ কফি খেলে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত অতিরিক্ত কফি খেতে থাকেন তখন ফল উল্টো হতে পারে। নিয়মিত কফি খেলে তা হতে পারে অত্যাধিক ক্লান্তির কারণ। তাই ক্লান্তি কাটাতে কফি খেয়ে উল্টো যেন ক্লান্ত না হয়ে যান, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কতটুকু কফি খাওয়া যাবে?
প্রতিদিন কফি আপনি খেতে পারেন, তবে বেশি খাওয়া চলবে না। এক্ষেত্রে পরিমাণ জেনে নেওয়া জরুরি। তাতে কফি খাওয়ার কারণে সমস্যায় ভুগতে হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে দুই কাপ কফি খাওয়াই যথেষ্ট অথবা এক কাপও খাওয়া যেতে পারে। তবে দুই কাপের বেশি কফি খাবেন না। সন্ধ্যার পর কফি থেকে দূরে থাকুন। এতে কফির অপকারী রূপ দেখতে হবে না।