পাকা চুল কালো করার ঘরোয়া ৩ উপায়
অল্প বয়সেই চুলে পাক ধরছে কারও কারও। বয়স বাড়লে চুলে পাক ধরা স্বাভাবিক, কিন্তু অল্প বয়সে এমনটা হলে মন খারাপ করাটাই স্বাভাবিক। চুল কালো করার জন্য কৃত্রিম রং ব্যবহার করেন কেউ কেউ। এটি সাময়িক সৌন্দর্য দিলেও বাড়িয়ে দিতে পারে ক্ষতির পরিমাণ। তাই অসময়ে পাকা চুল কালো করতে হলে ঘরোয়া উপায়ের বিকল্প নেই।
চুল পাকার কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়সজনিত কারণ ছাড়া যদি কম বয়সেই চুল পেকে যায় তবে তা অবশ্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। আমাদের শরীরে রয়েছে লাখ লাখ চুলের ফলিকল। এটি চুল তৈরি ও চুলের রঙ ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পিগমেন্ট কোষে মেলানিন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি চুলের রং ঠিক রাখতে কাজ করে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পিগমেন্ট কোষগুলো নষ্ট হয়ে গেলে চুলে পাক ধরতে শুরু করে।
অসময়ে চুলের পাকার কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, চুলে অসময়ে পাক ধরার অন্যতম কারণ হলো ভিটামিনের অভাব। ভিটামিন বি-৬, বি-১২, বায়োটিন, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন ই এর ঘাটতির কারণে অল্প বয়সেই চুলে পাক ধরতে পারে। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জিনগত কারণ এই সমস্যার জন্য প্রধান দায়ী। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, ধূমপানের অভ্যাসও হতে পারে অসময়ে চুল পাকার জন্য দায়ী। অল্প বয়সে চুলে পাক ধরলে বেছে নিতে পারেন এই ৩ ঘরোয়া উপায়-
আমলকি ও নারিকেল তেল
আমলকিতে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি। চুলের কোলোজেন উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে এই ভিটামিন। আমলকি ও নারিকেল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে তা পাকা চুল কালো করতে কাজ করে। সেজন্য আপনাকে ২ চা চামচ আমলকির গুঁড়া ও তিন চা চামচ হালকা গরম নারিকেল তেল নিতে হবে। এরপর ভালো করে মিশিয়ে তেলটুকু ঠান্ডা করে নিতে হবে। মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়েন নিন। এভাবে অপেক্ষা করুন এক ঘণ্টার মতো। এরপর মাইল্ড কোনো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এই তেল সপ্তাহে তিনদিন ব্যবহার করুন। এটি প্রাকৃতিকভাবে আপনার চুল কালো করতে কাজ করবে।
কারিপাতা ও নারিকেল তেল
চুল কালো রাখতে দারুণ কার্যকরী একটি উপাদান হলো কারিপাতা। কারণ চুল কালো করতে প্রয়োজন হয় মেলালিন। আর কারিপাতায় এই উপাদান থাকে পর্যাপ্ত। সেইসঙ্গে এটি নতুন চুল গজাতেও সাহয্য করে। একটি পাত্রে ৩ চা চামচ নারিকেল তেল নিন। এরপর তাতে ৫-৬টি কারিপাতা দিন। এবার চুলায় বসিয়ে হালকা আঁচে নাড়াতে থাকুন। মিশ্রণটি কালচে হয়ে এলে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। এরপর চুলের গোড়ায় এই তেল ম্যাসাজ করে নিন। অপেক্ষা করুন ঘণ্টাখানেক। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে ২-৩ দিন এই তেল ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
লেবুর রস ও নারিকেল তেল
উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ও ফসফরাসযুক্ত ফল হলো লেবু। লেবু খাওয়ার উপকারিতা তো জানেন, চুলের যত্নেও এটি সমান কার্যকরী। কারণ লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও ফসফরাস চুলের পিগমেন্টেশন বজায় রাখতে কাজ করে। এটি ব্যবহার করার জন্য আপনাকে ২ চা চামচ লেবুর রস নিতে হবে। এরপর এর সঙ্গে মেশাতে হবে ২ চা চামচ হালকা গরম নারিকেল তেল। মিশ্রণটি ভালো করে চুলের গোড়ায় লাগাতে হবে। ঘণ্টাখানেক রেখে চুলে শ্যাম্পু করে নেবেন। এভাবে সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন।