‘নামিদামি ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি করে ভেজাল মদ’
ভেজাল মদ তৈরি করে বোতলের গায়ে লাগানো হচ্ছে নামিদামি ব্র্যান্ডের স্টিকার। এ মদগুলো বিক্রি হচ্ছে ঢাকা মহানগীরসহ বিভিন্ন এলাকায়। যা পান করে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঝুঁকে পড়ছেন মানুষ। সম্প্রতি ভেজাল মদ পান করে ঢাকা শহরে ৬ জন লোক মারা গেছেন।
এ ঘটনায় ৬ জন গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সে মামলার রিমান্ডের আবেদন করা তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক রিপন উদ্দিন তথ্যগুলো উল্লেখ করেন।
ভেজাল মদ তৈরির ঘটনায় গত ২ ফেব্রুয়ারি ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- মনতোষ চন্দ্র অধিকারী, সাগর বেপারী, রেদুয়ান উল্লাহ, নাসির আহমেদ ওরফে রুহুল, জাহাঙ্গীর আলম ও সৈয়দ আল আমিন।
মামলার রিমান্ডের আবেদন থেকে জানা যায়, গত কয়েকদিনে ভেজাল মদ সেবনের পর অসুস্থ হয়ে ছয় জন মারা গেছে। ঘটনাটি সারাদেশে আলোড়ন ও শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভেজাল মদ তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতের অভিযোগে ১ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানা এলাকার নতুন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট সামনে থেকে মনতোষ চন্দ্র অধিকারী, রেদুয়ান উল্লাহ ও সাগর বেপারীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খিলবাড়ীরটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিন আহমেদ ওরফে রুহুল, জাহাঙ্গীর আলম ও সৈয়দ আল আমিনকে আটক করা হয়।
অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যান্ডের ১৯ বোতল মদ ,বিভিন্ন ব্যান্ডের স্টিকারযুক্ত খালি বোতল, একটি নীল রঙের প্লাস্টিকের জারিকানের ভিতরে ২৭ লিটার স্পিরিট ভর্তি বোতলের গায়ে লাগানো অ্যাবসুলেট স্টিকার ৩৫০টি, মদের ছাঁকার ছাকনি ১টি, সাদা চোঙ্গি ২টি, মদের বোতলের মুখে লাগানোর জন্য ২৪টি ছিপি, ২শ গ্রাম খয়েরি রংয়ের মদের কেমিক্যাল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নাসির উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম ও সৈয়দ আল আমিন জানান, এ কারখানা থেকে ভেজাল মদ চাহিদামত ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়।
আরও জানা গেছে, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে অনুমোদন ছাড়া ভেজাল মদের কারখানা স্থাপন করে। আসামিরা ভেজাল মদ তৈরির সক্রিয় সদস্য। তারা অনুমোদন ছাড়াই স্পিরিট, ক্ষতিকর রংসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে ভেজাল মদ তৈরি ও বিক্রি করে। যা পান করে মানুষ মৃত্যুর মুখে ঝুঁকে পড়ছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে, রহস্য উদঘাটন করেতে, আসামিদের কোনো সহযোগী আছে কি-না, আরও মদ তৈরির কারখানা আছে কি-নাসহ জানার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রিপন উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত প্রত্যেকের ৫দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
টিএইচ/এমএইচএস