নিজের করা মামলায় বাবুল আক্তারের জামিন নামঞ্জুর
মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা ফখরুদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, স্ত্রী মাহমুদা খানমকে হত্যার ঘটনায় নিজের করা মামলায় ৯ জানুয়ারি বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসামি বাবুল আক্তারের জামিন আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আজ আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
মামলা পরিচালনায় মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরীকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট সাব্বির আহম্মদ শাকিল, মো. সাহাব উদ্দিন ও সাফায়াত শাকির।
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার ও মিতুর বাবা বাদী হয়ে পৃথক সময়ে দুটি মামলা করেন পাঁচলাইশ থানায়। এ দুটি মামলা তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। এরমধ্যে বাবুল আক্তারের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলছে। অধিকতর তদন্ত চলাকালে আদালতের আদেশে ৯ জানুয়ারি বাবুল আক্তারকে নিজের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন, সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন না নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। মিতুর বাবার করা মামলাটিও তদন্ত করছে পিবিআই।
স্ত্রী খুন হওয়ার আগে চট্টগ্রাম নগরীর জিএইসি এলাকায় ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহির ও মেয়ে তাবাসসুমকে নিয়ে থাকতেন বাবুল দম্পতি। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নিজাম রোডে ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহিরকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি।
জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেছিলেন বাবুল। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। এক পর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারের নাম। তার করা মামলাতেই সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১১ মে ডেকে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পরে ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। স্ত্রী মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। তারপর তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। বাবুল বর্তমানে কারাগারে আছেন।
কেএম/জেডএস