বাসেত মজুমদারের মৃত্যুতে শোকাহত বিএনপির জয়নুল
রাজনীতিতে দুই মেরুর বাসিন্দা হলেও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার কমতি ছিল না। আইন অঙ্গনে দুজন দুই দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে দুই দলের প্যানেল থেকে দুজনই আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আব্দুল বাসেত মজুমদার ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আব্দুল বাসেত মজুমদার মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপিপন্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, আজ আমার জন্য খুবই বেদনাদায়ক একটি দিন। একজন অকৃত্রিম বন্ধু, বড় ভাই ও অভিভাবককে হারিয়েছি।
৩৩ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করার স্মৃতিচারণ করে আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সভাপতি বলেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে তিনি ২৪৩ নম্বর রুমে আর আমি ২৪৪ রুমে বসতাম। দুজনের রুম পাশাপাশি হওয়ায় দীর্ঘ সময় একসঙ্গে কাটিয়েছি। একসঙ্গে প্র্যাকটিস করেছি, বিদেশে গিয়েছি। ১৯৮৮ সালে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। সেই থেকে দুজনের একসঙ্গে পথচলা।
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, তার সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক বেশি ছিল। মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও হাসপাতালে থাকা অবস্থায় আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন। আমি হাসপাতালে গেলে আমাকে দেখে তিনি খুশি হয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে এক সঙ্গে মোনাজাত করি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, প্রত্যাশা ছিল তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় তিনি চলে গেলেন। তার পরিবারকে সমবেদনা জানাই। তিনি গরিবের আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছন।
তিনি বলেন বলেন, ১৯৯১ সালে আমরা এক সঙ্গে ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেমিনার করতে গিয়েছি। দুজনের রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন হলেও সম্পর্ক ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ। আব্দুল বাসেত মজুমদারের সঙ্গে আমার ছোট ভাই-বড় ভাই সম্পর্ক। রাজনৈতিক পরিচয় ভিন্ন হলেও আমাদের সম্পর্ক ছিল সৌহার্দপূর্ণ।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান গরিবের আইনজীবী হিসেবে পরিচিত পাওয়া আব্দুল বাসেত মজুমদার।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আব্দুল বাসেত মজুমদারকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (২৫ অক্টোবর) তাকে লাইফ সাপোর্টে দেওয়া হয়। মেরুদণ্ডের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি।
এমএইচডি/ওএফ