আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা কেন নয়
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) স্পট ফিক্সিং ও অনলাইন বেটিং কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ঘটনায় আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
ক্রীড়া সচিব ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সোমবার (২৫ অক্টোবর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এর আগে গতকাল ব্যারিস্টার সুমন এ বিষয়ে রিট দায়ের করেন।
গত ২৬ আগস্ট প্রিমিয়ার লিগে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে দুই বছরের জন্য প্রথম বিভাগে নামিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ক্লাবটির চার কর্মকর্তাকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ডিসিপ্লিনারি কমিটি।
আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের অনৈতিক কার্যকলাপের প্রমাণ পেয়েছিল এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনও। এএফসির নির্দেশনা পেয়েই বাফুফে ক্লাবটির বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত করে। বাফুফের পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে নানা তথ্য-উপাত্ত এবং ক্লাবের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের মোবাইল কথোপকথনের ফরেনসিক প্রতিবেদনে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রমাণ পায়।
বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি অনেকগুলো সভা করে। আমাদের কাছে তারা একটি রিপোর্ট দেয়। সেই রিপোর্ট ও ডিসিপ্লিনারি কোডের ভিত্তিতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
দেশের ফুটবলে পাতানো ম্যাচের আগে শাস্তি হলেও বেটিং কিংবা ফিক্সিংয়ের জন্য এ রকম শাস্তি এবারই প্রথম। এএফসির তদারকির জন্য বাফুফে গুরুত্ব সহকারে এই তদন্ত করেছে।
ক্লাবের সাবেক ফিজিও ভারতের সঞ্চয় বোস, প্লেয়ার এজেন্ট ভারতের আজিজুল শেখকে ফুটবল থেকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ক্লাবের খেলোয়াড় আপেল মাহমুদকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পাঁচ বছরের জন্য। এছাড়াও তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে খেলোয়াড় আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, মো. রকি, জাহিদ হোসেন, রাহাদ মিয়া, সৈকত, শামীম রেজা ও অস্ট্রেলিয়ান স্মিথকে।
দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফুটবলার ওমর ফারুক, রাকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ফাহাদ, মিরাজ মোল্লা ও নাইজেরিয়ান চিজোবা ক্রিস্টোফারকে।
পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে জমা দেওয়ার পর ক্লাবটিকে পেশাদার ফুটবল লিগ থেকে বহিষ্কার করে প্রথম বিভাগে নামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রথম বিভাগে দুই বছর খেলার নির্দেশ দেয়। অবনমন ও নিষিদ্ধের পাশাপাশি ক্লাবকে পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার সুমন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জুয়া খেলে ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সংশ্লিষ্টরা ফৌজদারি অপরাধ করেছে। এর জন্য আলাদা শাস্তি হওয়া দরকার, তাই রিট করেছিলাম। আদালত রুল জারি করেছেন।
এমএইচডি/ওএফ