ড্রেনে পড়ে মৃত্যু : দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে নোটিশ
ড্রেনে পড়ে সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সেহরীন মাহবুব সাদিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও আইনজীবী ইশরাত হাসান এই নোটিশটি পাঠান।
নোটিশে সালেহ আহমেদ ও সেহরীন মাহবুব সাদিয়া মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়া এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে বিবাদীরা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তার রিপোর্ট প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ‘চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু : দায় কার?’ এই শিরোনামে একটি নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমদের পর চট্টগ্রাম নগরীতে নালায় পড়ে সেহেরীন মাহবুব সাদিয়ার মৃত্যুতেও দায় নিতে চাইছে না সিটি করপোরেশন কিংবা সিডিএ।
সরকারি দুটি সংস্থাই একে অন্যকে দোষ দিচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বলছে, দুদিকে ফুটপাত করলেও খালের মুখটি অরক্ষিত রেখেছে সিডিএ। তাই এর দায় সিডিএর।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ বলছে, খালের মালিকানা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। তাই খালের মুখে সুরক্ষা নিশ্চিতের দায়িত্বও তাদের।
নালা-খালে একের পর এক মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। তারা বলছেন, দায় এড়ানোর এই প্রবণতা প্রমাণ করে সেবা সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো স্বাচ্ছন্দ্যের পরিবর্তে নগরবাসীর ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।
গত ২৫ অগাস্ট মুরাদপুর এলাকায় খালে পড়ে তলিয়ে যান সালেহ আহমদ। তার খোঁজ আর মেলেনি। তার আগে গত ৩০ জুন ষোলশহর চশমা হিল এলাকাতেও এমন দুর্ঘটনায় মারা যান দুজন।
সবশেষ সোমবার রাতে আগ্রাবাদে নবী টাওয়ারের কাছাকাছি নাছিরছড়া খালে পড়ে তলিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিয়া। পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় কয়েক টন আবর্জনার স্তূপ সরিয়ে ১৯ বছর বয়সী সাদিয়ার লাশ উদ্ধার হয়।
সোমবার রাতে যেখানে সাদিয়া পড়ে যান, শেখ মুজিব সড়ক সংলগ্ন সেই খালের মুখটি ছিল খোলা। দুই পাশে ৬ ফুট চওড়া ফুটপাত থাকলেও খালের মুখে তা মাত্র আড়াই ফুট চওড়া।
সরু সেই অংশের উপর দিয়ে হেঁটে পেরোনোর সময় পড়ে যান সাদিয়া। আবর্জনায় ভরা সেই খালের মুখ থেকে সাদিয়া পানির টানে চলে যান শেখ মুজিবের সড়কের নিচে। সেই সড়কের নিচে বক্স কালভার্ট। কালভার্টের স্ল্যাব ভাঙার পর সাদিয়ার সন্ধান মেলে।
শেখ মুজিব সড়কের ওপর দিয়ে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ চলছে। নিচের সড়কটি প্রশস্ত করছে সিডিএ। সেই কাজের অংশ হিসেবে রাস্তা চওড়া করার পর পাশে নতুন করে নালা করা হয়।
এর আগে সালেহ আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার পর সিডিএ ও সিটি করপোরেশন একে অন্যের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়েছিল।
এমএইচডি/এমএইচএস