ইভ্যালি পরিচালনায় বিচারপতি মানিককে প্রধান করে কমিটি
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
পরে রিটের পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর কোম্পানি আদালতে আবেদন করেছিলাম। সেখানে একটি আবেদন ছিল ইভ্যালি অবসায়নে যাতে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। আজ ওই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। আজ শুনানি নিয়ে আদালত একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। ইভ্যালি এখন এ কমিটি দ্বারা পরিচালিত হবে। এ বোর্ডের সদস্য থাকবেন পাঁচ জন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে।
এই কমিটির কাজ প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেন, আদালতের আদেশ পাওয়ার পরপরই তারা (কমিটি) বোর্ড মিটিংয়ে বসবেন। কোথায় কী আছে সবকিছু বুঝে নেবেন। কোম্পানি যেভাবে চলে, সেভাবে প্রথমে বোর্ড মিটিং বসবে। তাদের (বোর্ড) দায়িত্ব হলো টাকাগুলো কোথায় আছে, কোথায় দায় আছে, তা দেখা।
আদালত আরও বলেন, যদি দেখা যায়, কোনো একটি মিটিং করা সম্ভব হচ্ছে না, তখন কোম্পানি কোর্টের স্যুয়োমটো ক্ষমতা আছে। আদালত বোর্ড গঠন করে দিতে পারেন। এখন এই বোর্ড গঠন করে দেওয়া হলো। কমিটি বসে বিষয়গুলো দেখবে। অডিট লাগবে, তারা অন্য কাজগুলোও দেখবে। এরপর সবকিছু করার পর বোর্ড যদি দেখে কোম্পানিটি চলার যোগ্যতা নেই, তখন অবসায়নের জন্য প্রসিড করবে। কোম্পানি অবসায়ন চেয়ে আবেদনকারী আবেদন করেছে। তখন আবেদনকারীর সঙ্গে বোর্ডও বলবে, কোম্পানিটি অবসায়ন করতে হবে। আর যদি বলে চালানো সম্ভব, তাহলে কোম্পানিটি চলবে। আদালতের লিখিত আদেশ পাওয়ার পরই বোর্ড মিটিং করে আগামী ২৩ নভেম্বর আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেবে এই কমিটি।
এর আগে ১৩ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য হাইকোর্ট যে কমিটি গঠনের কথা বলেছেন তার জন্য তিন জন সাবেক সচিবের নাম পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়, তারা হলেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, ভূমি সংস্কার বোর্ডের সাবেক সচিব ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী। পরে এ তিন জনের নামের মধ্যে থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারীকে প্রত্যাহারে আবেদন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত ১২ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য কমিটি করে দেওয়ার কথা বলেন হাইকোর্ট। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, একজন সচিব, চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট ও একজন আইনজীবীকে কমিটিতে রাখার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন আদালত।
শুনানিতে আদালত আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, কোম্পানির দুজন সদস্য, দুজনই কারাগারে। কীভাবে বোর্ড মিটিং হবে? বোর্ড মিটিং করতে গেলেও তা করা যাচ্ছে না। বোর্ড মিটিং না করতে পারলে টাকা কোথায় কী আছে, সে বিষয়েও জানা যাচ্ছে না। সাবেক বিচারপতি, সচিব ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসহ চার জন রাখা যেতে পারে। বেসরকারি কোম্পানিতে চার জনের বেশি সদস্যের দরকার নেই।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী ১১ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে সব নথি দাখিল করেন জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার।
তার আগে ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।
এমএইচডি/এসএসএইচ