এবার শিশু নিয়ে আইনি লড়াইয়ে ভারতীয় মা
জাপানি দুই শিশুকে নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মধ্যেই এবার আড়াই বছরের শিশুকে নিজের হেফাজতে নিতে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন এক বাংলাদেশি বাবা ও ভারতীয় মা। হাইকোর্ট দুই মাসের জন্য ওই শিশুকে ভারতীয় নাগরিক মা সাদিকা সাঈদের হেফাজতে রাখতে বলেছেন।
মা ও শিশু মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) ব্যবস্থাপনায় থাকবে। তবে বাংলাদেশি বাবা সপ্তাহে তিনদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিশুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এই দুই মাস সাদিকা সাঈদের পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা রাখতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। দুই মাস পর এই মামলার পরবর্তী আদেশ দেবেন আদালত।
আদালতে ভারতীয় মায়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম। বাংলাদেশি বাবার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাসুদ রেজা সোবহান।
শুনানিতে উভয়পক্ষ শিশু সন্তানকে নিজেদের হেফাজতে রাখার জন্য আদালতে আর্জি জানান। আদালত বলেন, আপনারা জেদাজেদি করবেন না। সন্তানের প্রতি মা-বাবা দুজনের অধিকার রয়েছে। আমরা আশা করছি দুই মাসের মধ্যে আপনারা সমঝোতায় পৌঁছবেন।
এর আগে গত ৯ আগস্ট ভারতীয় নাগরিক সাদিকা সাঈদ শেখকে দুই বছরের শিশু সন্তানসহ হাজির করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আজ গুলশান থানার পুলিশকে তাদেরকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছিল। গত ২৩ আগস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
জানা যায়, ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে অন্ধপ্রদেশের হায়দ্রাবাদের সাদিকা শেখ নামে এক নারীকে পছন্দ করেন রাজধানীর এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান শাহিনুর টি আই এম নবী। ২০১৭ সালে হায়দ্রাবাদে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালেশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন। ২০১৮ সালে তাদের ঘরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এক পর্যায়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকা শেখকে মারধরও করেন তার স্বামী। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়-স্বজনরা জানতে পারেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও সমাধান হয়নি। পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান।
গত ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশু সন্তানসহ আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হেবিয়াস কর্পাস রিট করে ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (ফ্লাড) পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী।
ভারতীয় মায়ের পক্ষের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পরপরই বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনুর টি আই এম নবী ভারতীয় নাগরিককে ডিভোর্স দিয়েছেন।
এমএইচডি/জেডএস