বিচারপতিকে চিঠি : সেই দুই শিশুকে মুক্তির নির্দেশ
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দণ্ড পাওয়া দুই শিশুকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নেত্রকোনার জেলা প্রশাসককে তাদের মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
দুই শিশুর মুক্তি চেয়ে এক আইনজীবীর চিঠি নজরে নিয়ে আজ বুধবার (৪ আগস্ট) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন।
এর আগে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দণ্ড পাওয়া দুই শিশুকে মুক্তি দিতে আজ সকালে হাইকোর্টের রিট বেঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে ইমেইলে চিঠি দেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ৪ আগস্ট দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দণ্ড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে জানতে পারি, নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের সাজা দিয়েছেন। এই রিপোর্ট পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। শিশু আইনের অধীন মোবাইল কোর্টের কোনো এখতিয়ার নেই। ফলে, অত্র সাজা এখতিয়ার বহির্ভূত।
চিঠি পাঠানোর যৌক্তিকতা নিয়ে আইনজীবী বলেন, আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। আমার মনে আছে, ফতোয়ার মামলায় পত্রিকার রিপোর্ট দরখাস্ত হিসেবে গৃহীত হয়েছিল। ছাত্রজীবনে পড়েছি, একটি টেলিফোন কল নাকি এফআইআর হিসেবে গণ্য হয়েছিল। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি পাঠিয়েছিলেন এক সন্তানহারা মা নীলাবতি বেহারা। সেই চিঠির ভিত্তিতে তিনি ক্ষতিপূরণও পেয়েছিলেন। স্বচক্ষে দেখেছি, পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনেক স্বপ্রণোদিত রুল জারি হয়েছে। বিচারও হয়েছে। জেল থেকে পাঠানো চিঠিগুলো জেল আপিল হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব উদাহরণ দেখে কিছুটা অতি উৎসাহী হয়ে এই পত্র লিখলাম। আশা করি, আমার এই পত্র বৃথা যাবে না।
চিঠিতে বলা হয়, আমার নিবেদন এই যে, সুপ্রিম কোর্ট রুলসের ১১ক অধ্যায়ের বিধি ১০ মোতাবেক অত্র চিঠিটি সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আবেদন হিসেবে বিবেচনা করে সংযুক্ত প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে উল্লিখিত শিশুদের তাৎক্ষণিক মুক্তির আদেশ দিতে অথবা ক্ষেত্রমতে উপযুক্ত আদেশ প্রদানে আপনার একান্ত মর্জি হয়।
অ্যাডভোকেট শিশির মনির ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাননীয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে ইমেইলে এ চিঠি পাঠিয়েছি। আমার জানামতে সরাসরি কোনো বিচারপতিকে চিঠি এটাই প্রথম।
এমএইচডি/এইচকে