৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে গ্রামীণফোনকে হুমায়ূন পরিবারের নোটিশ
কিংবদন্তিতুল্য লেখক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ সৃষ্ট চারটি জনপ্রিয় চরিত্র (নাটকের) অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করায় সেলফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এতে ৩ কোটি টাকার বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
গত রোববার (২৫ জুলাই) প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের ৬ সদস্যের পক্ষে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহ। নোটিশে মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকালে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহ।
হুমায়ূনের পরিবারের যে সদস্যরা এই নোটিশ পাঠিয়েছেন তারা হলেন- স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, কন্যা নোভা আহমেদ, শীলা আহমেদ ও বিপাশা আহমেদ, পুত্র নুহাশ হুমায়ূন ও ভাই জাফর ইকবাল।
ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহ বলেন, হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট জনপ্রিয় চারটি নাটকের চরিত্র বাকের ভাই, এলাচি বেগম, সোবহান সাহেব এবং তৈয়ব আলী- কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেছে গ্রামীণফোন। এতে আইন অনুযায়ী তারা লেখকের মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করেছে। এ কারণে গ্রামীণফোনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন লেখকের পরিবারের সদস্য ও উত্তরাধিকারীরা।
আরও পড়ুন : হুমায়ূন আহমেদ : গল্প, গদ্য ও জনপ্রিয়তা
আইনজীবী জানান, গ্রামীণফোন ২০২০ সালের জুলাই মাসে ‘কেমন আছেন তারা’ শীর্ষক কয়েক পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রমোশনাল অনুষ্ঠান প্রচার করে। অনুষ্ঠানটির টাইটেল ছিল গ্রামীণফোন নিবেদিত ‘কেমন আছেন তারা?’ যা গ্রামীণফোনের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচারিত হয়। অনুষ্ঠানে লেখক হুমায়ূন আহমেদের রচিত চারটি জনপ্রিয় চরিত্র বাকের ভাই (কোথাও কেউ নেই), এলাচি বেগম (অয়োময়), সোবহান সাহেব (বহুব্রীহি) এবং তৈয়ব আলীকে (উড়ে যায় বক পক্ষী) ব্যবহার করা হয়। এ জন্য গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে কোনো প্রকার অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ চারটি চরিত্র ব্যবহার করা পর্বগুলো ৩০ লাখের বেশি ভিউ হয়েছে। প্রচলিত আইনে এ ধরনের চরিত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণফোন তা মানেনি। এতে মেধাস্বত্ব আইন লঙ্ঘন হয়েছে।
আইনি নোটিশে গ্রামীণফোনকে ‘কেমন আছেন তারা’ অনুষ্ঠানের উক্ত পর্বগুলো তিন দিনের মধ্যে অপসারণ করে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যদের জানাতে বলা হয়েছে। মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ (৩ কোটি টাকার বেশি) ১৫ দিনের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যদের প্রদান করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট অনেকগুলো চরিত্রের মধ্যে বাকের ভাই, এলাচি বেগম, সোবহান সাহেব এবং তৈয়ব আলী অত্যন্ত জনপ্রিয়। এসব চরিত্রের অনুমতিবিহীন এবং বাণিজ্যিক ব্যবহার হুমায়ূন আহমেদের মেধাস্বত্ব অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। হুমায়ূন আহমেদের মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় আইনের উপর আস্থা রেখে যা যা করা প্রয়োজন আমরা সব করব।’
এমএইচডি/এসকেডি/জেএস