হলি আর্টিজান ট্রাজেডি : ৭ আসামির ফাঁসি কবে?
বিশ্বব্যাপী আলোচিত রাজধানীর হলি আর্টিজান ট্রাজেডির পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। তবে এ ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রায় কার্যকর এখনও সম্ভব হয়নি। ফাঁসির রায় কার্যকর করতে উচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনার মধ্যেও এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরি শেষ হয়েছে। আশার কথা শুনিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘করোনার কারণে গত বছর মার্চ মাস থেকে স্বাভাবিক আদালত হচ্ছে না। সে কারণে এ মামলার শুনানিতে দেরি হচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যেই মামলাটির আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক আসামিকে খালাস দেন বিচারিক আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান এ রায় দেন।
একই বছরের ৩০ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৭ আসামির ডেথরেফারেন্স ও মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টে আসে। এর পরেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মামলার পেপারবুক প্রস্তুতের নির্দেশ দেন।
কিন্তু ২০২০ সালের প্রথম থেকে করোনার আঘাত শুরু হলে স্বাভাবিক আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। উচ্চ আদালতে অনেক আলোচিত মামলার বিচার থমকে যায়। এর মধ্যেও হলি আর্টিজান মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি জন্য পেপারবুক তৈরি শেষ করা হয়। নিয়মানুযায়ী, প্রধান বিচারপতি এখন এই মামলার আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘হলি আর্টিজান মামলার আপিল শুনানির প্রস্তুতি চলছে। এখন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আনুষাঙ্গিক বেশকিছু কাজ করা হচ্ছে। আনুষাঙ্গিক এসব কাজ সম্পন্ন হলে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য একটি বেঞ্চে পাঠানো হবে।’
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশান এলাকার হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন বিদেশি নাগরিক। হামলা প্রতিরোধে গিয়ে বোমার আঘাতে নিহত হন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন।
এ হামলার ঘটনায় করা মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, হামলার মূল সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানারও আদেশ দেন আদালত। রায়ে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান নামে এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
হামলায় মূল অভিযুক্ত তামিম চৌধুরী নারায়ণগঞ্জের এক বাড়িতে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হন।
এমএইচডি/জেএস