রিটকারীদের নিয়োগ ঠেকাতে এনটিআরসিএ’র আপিলের শুনানি মঙ্গলবার
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারী ২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ ঠেকাতে এনটিআরসিএ যে আপিল করেছে তার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার। ওই আড়াই হাজার জনকে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ করতে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে গত ১৩ জুন আপিল বিভাগে আবেদন করে এনটিআরসিএ।
সোমবার (২১ জুন) এনটিআরসিএ’র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আমরা আবেদন করেছি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওই আবেদনের ওপর শুনানি।
নিবন্ধনধারী রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, চেম্বার আদালতে রিটকারীদের নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের রায় যেন বহাল থাকে, সেবিষয়ে আমরা আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি।
গত ৩১ মে রিটকারী ২৫০০ জনকে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি স্থগিতের আদেশ রি-কল করেন আদালত।
এনটিআরসিএ’র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এনরিআরসিএ’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ও ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ।
গত ৬ মে রিটকারীদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭ দিনের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি এক সপ্তাহের মধ্যে স্থগিত করেন আদালত।
এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরে নিবন্ধনধারী রিটকারীদের নিয়োগ দিতে একাধিকবার সময় নেয় এনটিআরসিএ।
গত ৭ মার্চ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে এনটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একইসঙ্গে নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন করতে বলেন আদালত। আদালতে এই আদেশ বাস্তবায়ন না করায় পুনরায় এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর এনটিআরসিএ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এই সময়ে আদালত অবমাননার বিষয় নিষ্পত্তি না করে তারা শিক্ষক নিয়োগে কোনো বিজ্ঞপ্তি দিতে পারবে না বলে আদেশে বলা হয়। নিবন্ধিত নিয়োগবঞ্চিত কয়েক শতাধিক প্রার্থীর আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ (ফরহাদ) ঢাকা পোস্টকে ওই দিন বলেছিলেন, ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছিলেন। ওই রায়ে কয়েক দফা নির্দেশনা ছিল। তার মধ্যে একটি ছিল সম্মিলিত মেধা তালিকা অনুযায়ী রিট আবেদনকারী এবং অন্যান্য আবেদনকারীদের নামে সনদ জারি করবে।
কিন্তু ২ বছরেও রায় বাস্তবায়ন না করায় রিট আবেদনকারীরা আদালত অবমাননার আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় ৩০ হাজার প্রার্থীর জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসিএ। এরপর নিয়োগ থেকে বিরত থাকতে একটি আবেদন করে রিটকারীরা।
এমএইচডি/এইচকে