বুড়িমারী মসজিদের খাদেম জাবেদ আলীকে হাইকোর্টে জামিন
লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে পবিত্র আল কোরআন অবমাননার অভিযোগে শহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় সংশ্লিস্ট মসজিদের খাদেম জাবেদ আলীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৩১ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হাসান মাহমুদ খান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শহিদুন্নবী জুয়েল গত বছরের ২৯ অক্টোবর বিকেলে সুলতান রুবায়াত সুমন নামে এক সঙ্গীসহ লালমনিরহাটের বুড়িমারী বেড়াতে যান। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন তারা। কিন্তু পবিত্র আল কোরআন অবমাননার অভিযোগে সন্দেহবশত জুয়েলকে হত্যার পর তার মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়। এরমধ্যে হত্যা মামলায় বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খাদেম জাবেদ আলীকে গতবছর ২ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয়। সোমবার জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। এর আগের দিন রোববার মামলার আরেক আসামি মো. শরিফুল ইসলামকে জামিন দেন একই হাইকোর্ট বেঞ্চ।
নিহত শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গতবছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। শহিদুন্নবী জুয়েল গতবছর ২৯ অক্টোবর বিকেলে সুলতান রুবায়াত সুমন নামে এক সঙ্গীসহ বুড়িমারী বেড়াতে যান। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন তারা।
কিন্তু পবিত্র আল কোরআন অবমাননার অভিযোগে সন্দেহবশত জুয়েল ও সুলতান রুবায়াত সুমনকে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখে স্থানীয় জনতা। খবর পেয়ে পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ওসি বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হন। কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা জানালা ভেঙে প্রশাসনের কাছ থেকে জুয়েলকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল গতবছর ১ নভেম্বর ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানায়, মসজিদে কোরআন অবমাননার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটিও কোরআন অবমাননার সত্যতা পায়নি।
এমএইচডি/ ওএফ