পুলিশের ৮৮ উপ পরিদর্শকের শূন্য পদে নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের রায়

বাংলাদেশ পুলিশের ৮৮ সাব-ইন্সপেক্টরকে (নিরস্ত্র) শূন্য পদের নিয়োগে রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১২ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস ও তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া।
আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ২০২৩ সালের ৩ মে পুলিশের নন ক্যাডার সাব ইন্সপেক্টর-এসআই (নিরস্ত্র) পদে জনবল নিয়োগ দিতে বিজ্ঞপ্তি দেয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনলাইন আবেদন পূরণপূর্বক চাকরিপ্রার্থীরা ওয়েব স্ক্রিনিং পাস করে ২০২৩ সালের ৬ থেকে ৮ জুন তিন দিনের শারীরিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। এরপর দুই দিনের লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৫৮৩৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। পরবর্তী সময়ে কম্পিউটার টেস্টে অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয় ৫০৩১ জন।
আরও পড়ুন
পরে একই বছরের ১৯ আগস্ট থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শেষে একই বছরের ১৩ অক্টোবর ৫০৩১ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৯২১ জনকে নিয়োগ দিতে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়।
পরে একই বছরের ১৭ থেকে ২৩ অক্টোবর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ৮৫৭ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। কিন্তু ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীর সারদার মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে ৮২৩ জন যোগদান করে।
বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজসহ কয়েকটি অনলাইন পত্রিকার প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৪০০ জনের বেশি শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও সারদায় আবাসন সংকটের জন্য ৯২১ জনকে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে।
২০২১ সালের ৩৯তম এসআই (নিরস্ত্র) নিয়োগের পর ২০২২ সালের বাংলাদেশ পুলিশের এক পরিসংখ্যানে অনুযায়ী এসআই (নিরস্ত্র) শূন্য পদ সংখ্যা ছিল ১৩২০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদের নিয়োগ বলা থাকলেও ওই নিয়োগে শূন্য পদ পূরণ হয়নি। আবাসন সংকটের জন্য ৯২১ জনকে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করলেও যোগদান করে ৮২৩ জন। যা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত থেকে আরও ৯৮ জন কম। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা, লিখিত, মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা ও কম্পিউটার টেস্টে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়নি।
এরপর মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা ও কম্পিউটার টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত না হওয়া মো. এখলাছ চৌধুরীসহ ৮৮ জন ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রিট করেন।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর রুল জারি করেন। একই সঙ্গে রিটটি চলমান থাকা অবস্থায় গত ১ ফেব্রুয়ারি পুনরায় পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদের প্রকৃত শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত আগ্রহী পুরুষ ও নারী চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপর এসআই পদের ৮৮টি পদ সংরক্ষণের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবরে আবেদন করে ৮৮ জন রিটকারী।
ওই আবেদন নিষ্পত্তি না করায় পুলিশের ৮৮টি সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদ সংরক্ষণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন করেন রিটকারীরা।
পরে ১৫ মে, ২০২৪ সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পুলিশের সর্বশেষ সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদ থেকে ৮৮টি পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ পুলিশের ৮৮ সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) শূন্য পদের নিয়োগে রুল যথাযথ ঘোষণা হাইকোর্টের রায় ঘোষণা করেন।
আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া আরও বলেন, এই রায়ের ফলে বাংলাদেশ পুলিশের ৮৮ সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগের পথ সুগম হলো।
এমএইচডি/এসএম