সেই ইমামের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

রাজধানীর দক্ষিণখান সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে আজহারুল (৪০) নামে এক গার্মেন্টসকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার দায়ের করা মামলায় মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ মে) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক অঞ্জন কুমার সরকার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন। একই সঙ্গে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রিমান্ড বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসির আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাহমুদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ মে) ভোরে দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে টুকরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানকে (৬৫) আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

একইদিন বিকেলে কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম এ ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, ১৯ মে এশার নামাজের পর থেকে হত্যা মিশন শুরু করেন ইমাম আব্দুর রহমান। গলায় ছুরি চালানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে তিনি আজহারুলকে আরও কয়েকবার ছুরিকাঘাত করেন। এরপর মরদেহ টুকরো টুকরো করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। 

এশার নামাজের পর থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে এই হত্যা মিশন। মরদেহ ফেলে দেওয়ার পর তিনি নিজের কক্ষের এবং সেপটিক ট্যাংকের আশপাশের রক্তের দাগ পরিষ্কার করেন। মসজিদ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আজহারুলের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক জানান, মাওলানা আব্দুর রহমান সরদারবাড়ি জামে মসজিদে ৩৩ বছর ধরে ইমামতি করে আসছেন। আজহারুলের চার বছরের ছেলে মসজিদের মক্তবে পড়ত। আজহার নিজেও তার কাছে কোরআন শিখেছেন। এ সুবাদে আজহারের বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করতেন ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান। এতে মসজিদের ইমামের সঙ্গে আজহারের পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি আজহারুল অভিযোগ করেন তার স্ত্রীর সঙ্গে ইমাম অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। এ নিয়ে কথা বলতেই ১৯ মে ইমামের কক্ষে গিয়েছিলেন তিনি।

তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমাম আব্দুর রহমান আজহারুলের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। যদিও তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় আজহারুলের স্ত্রী বা আর কেউ জড়িত আছে কি না সে বিষয়ে এখনো মুখ খোলেননি ইমাম। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করবে পুলিশ।

টিএইচ/আরএইচ