যৌতুকের মামলায় স্ত্রী-শ্বশুর-শাশুড়ি-শ্যালকের বিচার শুরু
চট্টগ্রাম আদালতে জয়নাল আবেদীন নামে এক চিকিৎসকের করা যৌতুক মামলায় তার স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত অভিযোগ গঠন করে আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এসময় ভুক্তভোগী চিকিৎসকের স্ত্রী ফারহানা আক্তার পিংকি ও শাশুড়ি হোসনে আরা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ভুক্তভোগীর শ্বশুর মো. আব্দুল মতিন ও শ্যালক মো. জাহিদ হাসান উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিএম জাহেদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি বলেন, যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় দায়ের করা মামলাটি পাঁচলাইশ থানা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে যৌতুক দাবির সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন। আজ (রোববার) আদালতে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। এদিন দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিত থাকা দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ডা. মো. জয়নাল আবেদীন ভূঁঞার সঙ্গে ফারহানা আক্তারের ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। দুজনের এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। চিকিৎসক জয়নাল শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনো উপহার নেননি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে ফারহানা আক্তার তার স্বামীর কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের দামি উপহার ও টাকা দাবি করতে থাকেন। ফারহানা আক্তারের পরিবারের লোকজনও জয়নাল আবেদীনের কাছে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে টাকা দাবি করতেন। জয়নাল বিভিন্ন সময় তাদের টাকা ও উপহার দেন। স্ত্রী ফারহানা মামলাটি করার কয়েকমাস আগে তার বাবার বাড়িতে চলে যান। সেখানে গিয়েও তিনি চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে টাকা দাবি করেন।
মামলার করার সময়ে ভুক্তভোগী চিকিৎসকের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তখন তার পেটে দুটি জমজ বাচ্চা ছিল। অনাগত সন্তানদের কথা চিন্তা করে চিকিৎসক তার স্ত্রীকে একাধিকবার বাসায় আনার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছিলেন। তবে স্বামীর পরিবারে ফিরে আসার শর্ত হিসেবে ফারহানা ও তার পরিবার চিকিৎসকের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও কোনো সমাধান না হওয়ায় ভুক্তভোগী আদালতে মামলাটি করেন।
আইনজীবীরা জানান, যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় বলা হয়েছে- যদি বিবাহের কোনো এক পক্ষ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, বিবাহের অন্য কোনো পক্ষের নিকট কোনো যৌতুক দাবি করেন, তাহলে এ আইনের অধীনে তা একটি অপরাধ এবং সেজন্য তিনি অনধিক ৫ বছর কিন্তু অন্যূন এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এমআর/এআইএস