মাথা নিচু করে ট্রাইব্যুনাল ছাড়লেন যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি
জুলাই-আগস্টে গণহত্যা মামলায় যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল আজ (বৃহস্পতিবার)। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাকে হাজির করা হয়। চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে তাকে হাজির করা হয়।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে বের করা হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর যখন তাকে বের করা হলো তখন তিনি মাথা নিচু করে গিয়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে ওঠেন। তার দুই হাত দুইদিক থেকে দুজন পুলিশ সদস্য ধরে নিয়ে গিয়ে তাকে প্রিজন ভ্যানে ওঠান। ট্রাইব্যুনালের গেট দিয়ে বের করার পরই সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে আর তিনি কোনো দিকে তাকাননি। মলিন চেহারায় মাথা নিচু করে পুলিশি পাহারায় সরাসরি গিয়ে প্রিজন ভ্যানে উঠে যান। সাংবাদিকরা ক্যামারার দিকে তাকাতে বললেও তিনি মাথা নিচু করেই ছিলেন।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদ সম্মেলনে বলেন, জুলাই আগস্টের বিপ্লবে সবচেয়ে বড় গণহত্যা হয়েছিল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায়। আহত অবস্থায় পড়ে থাকার পরেও ব্রাশ ফায়ার করা হয়। প্রায় ৪ শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী এলাকায়। সেই হত্যাকাণ্ডে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান। তার সাথে আরও বেশ কিছু অফিসার জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে ওসি (তদন্ত) জাকির একজন। তাঈম নামে একজন যুবককে আহত অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার সময় ঠান্ডা মাথায় গুলি করা হয়। পরবর্তীতে তাকে আবারও নির্যাতন করে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। এই মামলাতে তাদের বিরুদ্ধে আগেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। অভিযুক্ত সাবেক ওসি আবুল হাসানকে আগে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য উদঘাটন করতে চাই। যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, কীভাবে কার নির্দেশে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হলো, কোন কোন অফিসারের মাধ্যমে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, গোলাবারুদ কোত্থেকে আসলো, কারা নির্দেশ দিল, এসব বিষয়ে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে অনুমতি চেয়েছি। অফিস চলাকালীন একদিনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের তদন্ত সংস্থার কাছে দেওয়া হবে।
চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এ ছাড়া তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানানোর জন্য আমরা আদালতের কাছে দুই মাস সময় চেয়েছিলাম, আদালত ১ মাস সময় দিয়েছেন।
এএসএস/এনএফ