যা আছে বিচারকদের বদলি-পদায়নের খসড়া নীতিমালায়
# ১০ শতাংশ জমির মালিক হলে ওই জেলায় পদায়ন নয়
# যে আদালতে পরিবারের সদস্য আইনজীবী, সেখানে বদলি নয়
# দুই বছর আইনপেশা পরিচালনা করলে সে আদালতে ১০ বছর বদলি নয়
অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারকদের বদলি ও পদায়নে অভিন্নতা বজায় ও সামঞ্জস্যতা আনয়নের মাধ্যমে দক্ষ বিচার প্রশাসন গঠনের উদ্দেশ্যে এই নীতিমালা করা হয়েছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ এ খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, এমন কোনো কর্মস্থলে (আদালত/ট্রাইব্যুনাল) বিচারককে বদলি করা যাবে না যেখানে তার স্বামী/স্ত্রী, বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাই-বোন, দাদ ও দাদি আইন পেশায় নিযুক্ত রয়েছেন। এছাড়া সহকারী জজ হিসেবে যোগদানের আগে কোনো আইনজীবী সমিতিতে দুই বছর আইন পেশা পরিচালনা করলে চাকরিতে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী দশ বছর ওই জেলায় তাকে পদায়ন করা যাবে না। কোনো জেলায় ক্রয়সূত্রে দশ শতাংশের বেশি কৃষি বা অকৃষি ভূমির মালিক থাকলে ওই বিচারককে ওই জেলায় পদায়ন করার সুযোগ নাই।
আরও পড়ুন
এই নীতিমালার ওপর বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে কর্মরত সব জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের তাদের মতামত লিখিতভাবে ৭ নভেম্বরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরে পাঠাতে বলা হয়েছে।
নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে, নিম্ন আদালতে কর্মরত কেো বিচারক প্রতিটি কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তবে প্রধান বিচারপতির কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো বিচারক কোনো বিশেষ দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন বা কোনো বিচারক বদলি হলে বিচার প্রশাসনে ব্যাঘাত সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে সেক্ষেত্রে ওই বিচারক আরও এক বছর ওই কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
চৌকি আদালতে কর্মরত বিচারকের পদায়নের মেয়াদকাল হবে সর্বোচ্চ এক বছর। বিচারকদের ফিট লিস্ট ছয় মাস অন্তর অন্তর পরিমার্জন করতে হবে। কোনোরূপ ব্যতিক্রম ব্যতিরেকে বিচারকদের দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতে পালাক্রমে বদলি করতে হবে। কোনো কর্মস্থলে একজন বিচারককে একাদিক্রমে দু’বার বদলি/পদায়ন করা যাবে না। এছাড়া স্থানীয় নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ তথা জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পদে পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে প্রস্তুত করা ফিট লিস্ট অনুসরণ করতে হবে। মোট চাকরিকালে কোনো বিচারক তিন মেয়াদের বেশি প্রেষণে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। বদলি প্রস্তাবের সময় বিচারকের সততা, যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা বিবেচনা করতে হবে। তবে এই নীতিমালায় যা কিছুই থাকুক না কেন প্রধান বিচারপতি উপযুক্ত মনে করলে কোনো বিচারকের বদলি বা পদায়নের ক্ষেত্রে এই নীতিমালায় বর্ণিত শর্তসমূহ শিথিল করতে পারবেন।
এমএইচডি/এসএম