পি কে হালদারের বিরুদ্ধে যেকোনো সময় রেড অ্যালার্ট জারি
৩ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের ঠিকানা সরকারকে জানিয়েছে কানাডা। যেকোনো মুহূর্তে এই অর্থ পাচারকারীর বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করবে ইন্টারপোল।
রোববার (৩ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ তথ্য জানান।
এদিকে পি কে হালদারের প্রতারণার শিকার সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের পরিবারসহ ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা মামলায় পক্ষভূক্ত হয়েছেন। আত্মসাৎকৃত টাকা ফিরিয়ে দিতে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তারা।
ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা মামলায় পক্ষভূক্ত হয়েছেন।
ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ নেন ক্ষতিগ্রস্ত ৪ বিনিয়োগকারী।
আজ রোববার পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কী ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার- সে বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন ধার্য ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় যেকোনো মুহূর্তে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করবে বলে জানা গেল।
আজ আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ নেন পি কে হালদারের পিপলস লিজিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৪ বিনিয়োগকারী। যাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের বড় মেয়ে ড. নাশিদ কামাল, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা শওকত উর রহমান ও ক্যান্সারে আক্রান্ত সামিয়া বিনতে। তারা জীবনের শেষ সম্বলটুকু ফিরিয়ে দিতে আদালতের কাছে আবেদন জানান।
এ সময় তারা পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও অর্থ পাচারের ঘটনায় অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে।
মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ জানুয়ারি।
আগামী ৫ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর পি কে হালদারের গ্রেফতারি পরোয়ানা ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো এবং তার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান হাইকোর্ট। ৩ জানুয়ারির মধ্যে তা জানাতে বলা হয়।
গত ১৮ নভেম্বর একটি জাতীয় পত্রিকায় ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেফতার করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ অনুসারে দুদক ২ ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদন দাখিল করে।
প্রশান্ত কুমার হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
গত ১৯ জানুয়ারি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
প্রশান্ত কুমার হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এরমধ্যে দেশে ফিরতে প্রশান্ত কুমার হালদার এ বিষয়ে আদালতের কাছে আবেদন করতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের কাছে একটি চিঠি দেন। এরপর কোম্পানিটি আদালতে আবেদন করে। গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালত বলেন, পি কে হালদার কখন কীভাবে আসবেন তা জানাতে। পরে ২০ অক্টোবর একটি আবেদন করে কোম্পানিটি।
গত ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট এ বিষয়ে আদেশ দেন। আদেশে দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার গ্রেফতার নিশ্চিত করতে বলা হয়। পরে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠাতে বলা হয়। পুলিশের মহাপরিদর্শক, ইমিগ্রেশন অথরিটি চিফ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এমএইচডি/এইচকে