‘৫৭ জনের দণ্ডের জন্য দুবাইয়ের কনসাল জেনারেল দায়ী’
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে দণ্ডিত হওয়া ৫৭ জনসহ অন্য দেশে আটকদের মুক্তির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) চেয়ারপারসন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম রোববার (১৮ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম, ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ আলম, অ্যাডভোকেট ফিরোজা পারভীন, অ্যাডভোকেট শারমিন আক্তার মিম, অ্যাডভোকেট জাকিয়া আক্তার ও ব্যারিস্টার ফাইজা মেহরিন।
আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ জানান, তখন (দূতাবাসের) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দুবাইয়ের কর্মকর্তাদেরকে জানিয়েছেন এরা সন্ত্রাসী, (প্রবাসী আন্দোলনকারীরা) এরা স্বাধীনতাবিরোধী, এদেরকে অ্যারেস্ট করলে ওনাদের আপত্তি নেই। যার কারণে কোনো প্রকার আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যেক দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে এদেরকে (আন্দোলকারীদের) চুপ করাতে হবে, শাস্তি দিতে হবে।
তিনি আরও জানান, আমরা প্রধান উপদেষ্টা অন্যান্য উপদেষ্টাসহ পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছি। ওনারা যেন রেমিটেন্স যোদ্ধাদের নিয়ে ব্যবস্থা নেন। আমরা দেশ থেকে লিগ্যাল সাপোর্ট দেব।
ফাওজিয়া করিম ফিরোজ আরও বলেন, দুবাইয়ের যিনি কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন। তিনি কিন্তু সবচেয়ে দায়ী ব্যক্তি যিনি এই ৫৭ জনের দণ্ডের জন্য দায়ী। কোনো ধরনের লিগ্যাল সাপোর্ট দেননি তিনি। তিনি ওদেরকে (আন্দোলনকারীদেরকে) স্বাধীনতাবিরোধী বলেছেন। এটা খুব ফেভারিট ডায়ালগ ছিল। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির, যদি দ্বিমত পোষণ করতো তখন আপনি হয়ে যেতেন আরেক দলের ব্যক্তি। আপনি স্বাধীনতাবিরোধী। যখন মানবাধিকার কমিশনে ছিলাম তখন এ কথা আমি নিজেও শুনেছি।
তিনি বলেন, শুধু ৫৭ জনই নয়। আরও বেশি লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেকে জানেন না ট্রেস লেস হয়ে গেছে। শুধু আমিরাতে নয়, অন্যান্য দেশেও হয়েছে। আমাদের কাছে কিছু আত্মীয়-স্বজন এসেছেন। যারা ৫৭ জনের মধ্যে পড়ছেন না।
‘আমরা সব ধরনের সহায়তা দেব। আমরা দুবাইতে স্বেচ্ছায় একটি চেষ্টা করছি। সরকারকে তার ব্যবস্থা অবিলম্বে নিতে হবে।’
এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গণমাধ্যমের খবর অনুসারে বাংলাদেশে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গত ১৯ জুলাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ওই বিক্ষোভ করেন।
পরে আবুধাবির ফেডারেল কোর্ট অব আপিল ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া যেকোনো ধরনের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ।
এমএইচডি/জেডএস