দুই হাজার কোটি টাকা পাচার : ফরিদপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের জামিন
দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ফরিদপুর সদর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শামসুল আলম চৌধুরীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন
এদিন মামলাটিতে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। আসামিদের গ্রেপ্তার করা যায়নি মর্মে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আদালত পলাতক আসামিদের আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দেন।
এর আগে ৭ মে একই আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন শামসুল আলম চৌধুরী। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন।
গত ২২ এপ্রিল এ মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৬ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন একই আদালত। আসামিদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেল এবং এ এইচএম ফুয়াদ কারাগারে আছেন। ওইদিন তাদের আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা ঢাকা টাইমস পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান ওরফে দোলনসহ সাত আসামি আদালতে হাজিরা দেন। অপর ৩৬ জন পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে আগামী ৩০ মে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে গত ২২ জুন এ চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে আদালত মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছর ১ সেপ্টেম্বর মামলাটির অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সেদিন মামলাটিতে কিছু অসংগতি দেখতে পাওয়ায় আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে সিআইডিকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
সেই নির্দেশনা মেনে নতুন করে আরও ৩৬ জনকে আসামি করে মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি। রুবেল-বরকত ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আপন ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, তার এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জী, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।
সম্পূরক চার্জশিটের নতুন আসামিরা হলেন- নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, অ্যাডভোকেট অনিমেশ রায়, শামসুল আলম চৌধুরী, দীপক কুমার মজুমদার, শেখ মাহতাব আলী, সত্যজিৎ মুখার্জি, মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে মজনু, ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, গোলাম মো. নাছিম, মো. জামাল আহমেদ ওরফে জামাল, বেলায়েত হোসেন মোল্লা, মো. আফজাল হোসেন খান ওরফে শিপলু, অমিতাব বোস, চৌধুরী মো. হাসান, মো. জাফর ইকবাল ওরফে হারুন মন্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজা আক্তার পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ পুনুম, সাহেব সারোয়ার, আমজাদ হোসেন বাবু, স্বপন কুমার পাল, অ্যাডভোকেট জাহিদ বেপারী, খলিফা জামাল, হাফিজুল হোসেন তপন, রিয়াজ আহমেদ শান্ত, আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. মনিরুজ্জামান মামুন, মাহফুজুর রহমান, সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল শেখ, মো. রফিক মন্ডল, খন্দকার শাহীন আহমেদ ওরফে পান শাহীন, আফজাল হোসেন খান ও সাংবাদিক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান ওরফে দোলন।
উল্লেখ্য, ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।
এনআই/এমজে