‘এটাকে নির্বাচন বলা চলে না’, ‘অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি বলে মনে করছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে দেশের দুই জন বিশিষ্ট আইনজীবী নির্বাচন নিয়ে এ প্রতিক্রিয়া জানান।
আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, এটাকে সত্যিকারের নির্বাচন বলা যাবে না। আওয়ামী লীগ যে সরকার গঠন করবে তার নৈতিক ভিত্তি দুর্বল। নৈতিক ভিত্তি দুর্বল হলে সরকারের পক্ষে দেশ পরিচালনা করাটা কঠিন হয়ে যায়। আমার মনে হয় এতোদিন সরকার যেভাবে চলেছে সেভাবেই চলবে। কিছু মেগা প্রজেক্ট হবে। সরকারের সঙ্গে যারা ঘনিষ্ট তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
আরও পড়ুন
শাহদীন মালিক বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে এক ধরনের ছল চাতুরি দেখেছি। এবারের নির্বাচনে নতুন ধরনের ছল চাতুরি দেখলাম।
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কোনো অভিযোগ নেই। তাই আমেরিকার স্যাংশনের নামে জুজুর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে কখনও ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) সারা দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে।
বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া সারা দেশে নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। নির্বাচন হয়েছে ২৯৯ আসনে। ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রার্থী ছিলেন ১৯৭১ জন। ভোট নেওয়া হয়েছে ব্যালট পেপারে। ৩০০ আসনের মধ্যে মোট ২৯৮টির ফলাফল বেসরকারিভাবে জানা গেছে। নির্বাচনের নৌকা প্রতীক পেয়েছে ২২৪ আসন, স্বতন্ত্র ৬২, জাতীয় পার্টি ১১ ও কল্যাণ পার্টি একটি আসন পেয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল দাবি করেছেন নির্বাচনে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বড় অংশই বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তবে তারা ভোটার উপস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে।
দিনের বড় ঘটনা হলো চট্টগ্রাম-১৬ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল। পুলিশের এক ওসিকে ধমক দেওয়ায় এবং আগেও আচরণবিধি ভঙ্গ করার রেকর্ড থাকায় তার প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া চট্টগ্রামেই অপর এক ঘটনায় প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করার ঘটনা ঘটেছে। মুন্সীগঞ্জে নৌকার সমর্থক এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। তবে নির্বাচন কমিশনের দাবি, এটি নির্বাচনকেন্দ্রিক ঘটনা নয়।
এমএইচডি/এসএম