ঢাকায় একদিনে বিএনপি-জামায়াতের ৯৪ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড
রাজধানীর ছয় থানার নাশকতার আলাদা সাত মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের ৯৪ নেতাকর্মীর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকার আলাদা ছয়টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এসব রায় ঘোষণা করেন।
ধানমণ্ডি থানার মামলা
দশ বছর আগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার নাশকতার মামলায় জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সদস্য সচিব ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরবসহ আটজনের আলাদা দুই ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে উভয় ধারার সাজা একত্রে হওয়ায় তাদের দুই বছরের কারাভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, বিএনপির হারুন অর রশিদ, ওবায়দুল হক, শহীদুল ইসলাম হীরা ও মো. ইব্রাহিম।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানার সাতমসজিদ রোধে আসামিরা একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ফরাজী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ। মামলার বিচার চলাকালে ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ছয়জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।
খিলক্ষেত থানার মামলা
আট বছর আগে খিলক্ষেত থানার নাশকতার এক মামলায় ১০ জনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল ইসলামের আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছয়জন খালাস পেয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, ফজলুল হক ফজলু, জহির উদ্দিন বাবু, সালাউদ্দিন দর্জি, মো. শিশির, দেলোয়ার হোসেন, তুহিন, মাহফুজুর রহমান সজিব, আনিস, হাবিব উল্লাহ ও আনোয়ার।
২০১৫ সালে জানুয়ারি মাসে নাশকতার অভিযোগে খিলক্ষেত থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
কোতোয়ালি থানার মামলা
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা একটি নাশকতার মামলায় নয়জনকে দুই বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল ইসলাম এই রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসাদিরা হলেন, সাঈদ আহমেদ রানা, সাইদুর রহমান লিটন, মো. সুজন, আলমগীর, রজ্জব আলী পিন্টু, মোল্লা জজ, মামুন, আশরাফুল আমিন ও আনোয়ারুল আজিম।
কোতয়ালি থানার আরেক মামলা
পাঁচ বছর আগে রাজধানীর কোতয়ালি থানার এক মামলায় আলাদা তিন ধারায় ১১ নেতাকর্মীকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দারের আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, মো. সেন্টু, নব কুমার দত্ত, আবু তাহের, মাহির আহম্মেদ রানা, রজ্জব আলী পিন্টু, আসাদুজ্জামান রিপন, ইমরানুল হক ওয়াহিদ ও মুফতিজুল কবির কিরন।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নাশকতার অভিযোগ কোতয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
কামরাঙ্গীরচর থানার মামলা
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে কামরাঙ্গীরচর থানায় দায়ের করা মামলায় ১২ নেতাকর্মীকে আলাদা তিন ধারায় সাড়ে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত। তবে, একসঙ্গে সাজা চলবে বিধায় তাদের দুই বছরের কারাভোগ করতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, জাবেদ, মোহাম্মদ সায়েম, মোহাম্মদ নাঈম, গাফফার, দেলোয়ার হোসেন, শামীম, কবীর হোসেন, সোহেল আরমান জামাল ওরফে ভূত জামাল, টাকি বাবু, মো. দুলাল ও বক্সার বাবু।
২০১৮ সালে বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের কাজে বাধা ও নাশকতার অভিযোগ কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলাটি দায়ের করেন পুলিশ।
শাহবাগ থানার মামলা
২০১২ সালে শাহবাগ থানায় দায়ের করা এক মামলায় বিএনপির ২৬ নেতাকর্মীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন এই রায় দেন।
এছাড়া, ২০১২ সালের জুলাই মাসে মতিঝিল থানার এক মামলায় বিএনপির ১৮ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার এ রায় দেন।
এনআর/কেএ