পাইলটের মৃত্যু : ইউনাইটেড হাসপাতালের অবহেলা তদন্তের নির্দেশ
গালফ এয়ারের পাইলট মার্কিন নাগরিক ক্যাপ্টেন ইউসুফ হাসান আল হেন্দি মৃত্যুর ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো অবহেলা রয়েছে কী না, তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ তদন্ত করতে হবে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রোববার (১৬ জুলাই) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পাশাপাশি রুল জারি করেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব। রাষ্ট্রপেক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।
এর আগে গত ৬ জুন গালফ এয়ারের পাইলট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ইউসুফ হাসান মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে রিট করেন নিহত পাইলটের বোন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তালা আল হেন্দি।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাইলট ইউসুফ হাসান আল হেন্দি। ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালকে দায়ী করে হাসপাতালটির লাইসেন্স বাতিল এবং দায়িত্বে অবহেলার জন্য গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে তালা আল হেন্দি বলেন, গত বছর ১৪ ডিসেম্বর রাতে তার ভাই ঢাকার মেরিডিয়ান হোটেলে ছিলেন। রাত পৌনে ৩টার দিকে ঘুম থেকে উঠে তিনি ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হন। ভোর ৪টার দিকে তিনি বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়ার মাঝে পড়ে যান। যখন আমার ভাইয়ের মরদেহ আসে, তখন গালফ এয়ারের কর্মীরা সেখানকার ডাক্তারদের রিপোর্ট দেখাননি। আমরা নিশ্চিত যে, এর পেছনে একটি খারাপ উদ্দেশ্য ছিল এবং তারা তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছিল।
তালা আল হেন্দি বলেন, গালফ এয়ার তার ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে সঠিক কোনও যুক্তি খুঁজে না পেয়ে, তাড়াহুড়ো করে তার ভাইকে কবর দিয়েছে। ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে তিনি গালফ এয়ারের ভূমিকা তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা চেয়ে ২৮ মার্চ বেবিচকের বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। উল্লিখিত রিট পিটিশনের জন্য একটি স্লিপ ২ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি যথাসময়ে হাইকোর্টে শুনানির জন্য আসবে।
তালা আল হেন্দি বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতাল এবং গালফ এয়ার উভয় কর্তৃপক্ষেরই অবহেলা ছিল। গালফ এয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, তখন তারা তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
তালা আল হেন্দি চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসেন। তিনি দাবি করেন যে, ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে তার প্রয়াত ভাইয়ের মামলা সংক্রান্ত তথ্য এবং নথি বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি হাসপাতালের কোনও সহযোগিতা পাননি। ভাইয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশে ছুটে এসে খোঁজ-খবর নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার প্রমাণ পান বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন তালা আল হেন্দি।
সংবাদ সম্মেলনে তালা জানান, গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় আইনজীবীকে নিয়ে তিনি গুলশান থানায় মামলা করার জন্য গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি। পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করতে অস্বীকার করে। পরে ১৪ মার্চ ঢাকা মহানগর ২১ নম্বর আদালতে মামলা করেন তিনি। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।
এমএইচডি/এসএম