ফুলকোর্ট সভায় বিচারক কানিজ ফাতেমাকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত
যুগ্ম জেলা জজ কানিজ ফাতেমাকে চাকরিচ্যুতের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা। ফলে তিনি কোনো বেতন, ভাতা, পেনশন সুবিধা পাবেন না।
রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ফুলকোর্ট সভায় সভাপতিত্ব করেন।
ফুলকোর্ট সভার একাধিক সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায়, যুগ্ম জেলা জজ কানিজ ফাতেমা নির্দেশনা অমান্য করে দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর আগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন জিএ কমিটি কানিজ ফাতেমাকে চাকরিচ্যুতের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত আজ অনুমোদন করেছে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা। এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ের ১৯৬ জন বিচারকের পদোন্নতির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে ফুলকোর্ট সভা।
জানা যায়, শিক্ষা ছুটি নিয়ে তিন বছর এক মাসের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন যুগ্ম জেলা জজ কানিজ ফাতেমা। ২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত সরকার তার ছুটি মঞ্জুর করে। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছুটির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। ওই ছুটি শেষ হলে তিনি আবারও ছুটির আবেদন করেন। তবে তা নামঞ্জুর করে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে যুগ্ম জেলা জজ কানিজ ফাতেমা নির্দেশনা অমান্য করে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করতে থাকেন। ছুটি ছাড়া সেখানে অবস্থানের দুই মাস পর তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় আইন মন্ত্রণালয় থেকে। এর জবাবও দেন ওই বিচারক। তবে ওই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হলে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও সার্ভিস ত্যাগের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করে মন্ত্রণালয়। মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে মতামত চেয়ে চিঠি দেওয়া হলে তাতে একমত পোষণ করেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী তদন্তের জন্য উপ-সচিব এ কে এম এমদাদুল হককে দায়িত্ব দেয় মন্ত্রণালয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিলে বিচারক কানিজ ফাতেমার বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘সার্ভিস ত্যাগ’-এর দায়ে বিধি ১৬ (খ) (৪) অনুযায়ী চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্টে মতামতের জন্য পাঠানো হয়। গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্টের জিএ কমিটি সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে।
এমএইচডি/এসকেডি