দেশের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন কিছু লিখবেন না : প্রধান বিচারপতি
দেশের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা নিয়ে সতর্ক করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
রোববার (৭ মার্চ) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গোলাম সারোয়ারের জামিন শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি আসামি পক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, লেখেন, কিন্তু এরকমভাবে কিছু করবেন না, যা একজন শিক্ষিত মানুষের শোভা পায় না। মনে রাখবেন দেশের ইমেজ সবার আগে।
গত বছরের মার্চে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সিলেটে গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা হয়। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে নিয়ে কটাক্ষ ও ছবি বিকৃতি করে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট ও শেয়ারের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় গত বছরের অক্টোবরে হাইকোর্ট রুল দিয়ে সারোয়ারকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৮ অক্টোবর চেম্বার আদালতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত হয়। পরে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে জামিন আবেদন করা হয়।
আপিল বিভাগে শুনানিতে সারোয়ারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। তার হৃদযন্ত্রে চারটি স্টেন্ট পরানো আছে, স্বাস্থ্যগত কারণে জামিন চাওয়া হয়েছে। তখন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ বলেন, এত স্টেন্ট থাকার পরও আপনি এসব করেন? আইনজীবী বলেন, গত ১৪ মার্চ থেকে সারোয়ার কারাগারে আছেন। প্রায় এক বছর ধরে তিনি বিনা বিচারে কারাগারে আছেন। অভিযোগপত্র হয়নি এখনো। হাইকোর্ট মূলত মেডিকেল গ্রাউন্ডে জামিন দিয়েছেন।
এ পর্যায়ে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ভবিষ্যতে এগুলো করলে আর জামিন না। দেশের ইমেজ হলো সবার আগে। আপনি সতর্ক করবেন। আমেরিকায় তো মানুষ ‘স্যাটায়ার’ করে। কিন্তু আমাদের এখানকার মতো কুৎসিতভাবে লেখে না। একজন শিক্ষিত মানুষ কীভাবে এসব ভাষা ব্যবহার করতে পারে? তাহলে শিক্ষার দাম কী হলো?
আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, শব্দচয়নগুলো খুবই কুৎসিত। প্রধান বিচারপতি বলেন, একদিন একজনেরটা পড়েছি। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এগুলো পড়া যায় না। শব্দচয়ন এমন, সবার সামনে বলাও মুশকিল।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আপনি লিখেন, কিন্তু এ রকমভাবে কিছু করবেন না, যেটি একজন শিক্ষিত মানুষের জন্য শোভা পায় না। শুনানি নিয়ে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন। শুনানি শেষে সারোয়ারকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
এমএইচডি/আরএইচ