জামিন জালিয়াতি : যুবলীগ নেতাসহ ৩০ জনকে গ্রেপ্তারে নির্দেশ
বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মামলায় ভুয়া আগাম জামিনাদেশ তৈরির ঘটনায় সদর উপজেলার যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মোটর মালিক গ্রুপের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী সাত দিনের মধ্যে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করতে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম বলেন, একজন আইনজীবী সকালে কোর্টে এসে খবর নেন এ মামলায় ৩০ জন আসামির জামিন হয়েছে কি-না। তখন কোর্টের বেঞ্চ অফিসার বললেন, আমাদের কোর্ট থেকে এ ধরনের কোনো আগাম জামিন হয়নি। এমন কোনো আদেশ আমরা পাস করিনি।
এ সময় বেঞ্চ অফিসার তার কাছে জানতে চান জামিনাদেশের কোনো কপি আছে কি-না। তখন তিনি বলেন, মোবাইলে ছবি আছে। সেটি নিয়ে বেঞ্চ অফিসার বিষয়টি কোর্টকে জানান। কোর্ট বিষয়টি আমলে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনে তাদের গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দেন।
ভুয়া জামিনাদেশে দেখা যায়, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের নাম উল্লেখ করে সেখানে লেখা রয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়েছেন আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামি। কিন্তু ওই দিন এই কোর্ট থেকে এমন কোনো জামিনাদেশ হয়নি। এমনকি সেখানে আইনজীবীদের যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেটির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোট ভাই মশিউল আলম দীপন বাদী হয়ে সদর উপজেলার যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মোটর মালিক গ্রুপের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলামকে প্রধান করে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এর মধ্যে ৩০ জনের ভুয়া আগাম জামিনের আদেশ তৈরি করা হয়েছে।
৩০ জনকে গ্রেপ্তারের আদেশের পর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, যারা এভাবে ভুয়া জামিননামা তৈরি করেছেন তাদের গ্রেপ্তার করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। এই আদেশ জালিয়াত চক্রের জন্য সতর্কবার্তা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এমএইচডি/জেডএস/এফআর