মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা খালেক মন্ডলের মৃত্যুদণ্ড
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল খালেক মণ্ডলসহ দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, অপহরণসহ মানবতাবিরোধী ছয়টি অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সব্বোর্চ এ দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় এজলাস কক্ষে আসামির কাঠগড়ায় আব্দুল খালেক মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন খান রোকনুজ্জামান, তিনি পলাতক আছেন।
সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ২০৮ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল, সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল সূচনা বক্তব্য এবং সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরু হয়।
গত বছরের ১১ নভেম্বর মামলার শুনানি শেষ হয় এবং রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি অপেক্ষমান রাখা হয়।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৯ মার্চ এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। মামলায় তখন চারজন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে খালেক মণ্ডল কারাবন্দি। বাকি দুইজন মারা গেছেন। খান রোকনুজ্জামান এখনো পলাতক।
আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। যার মধ্যে ছয় জনকে হত্যা, দুই জনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
২০১৫ সালের ১৬ জুন ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খলিলনগর মহিলা মাদরাসায় কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে গোপন বৈঠকের সময় আব্দুল খালেক মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই বছরের ২৫ আগস্ট সাতক্ষীরায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার মধ্যে শহীদ মোস্তফা গাজী হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় ট্রাইব্যুনাল।
একাত্তরে শিমুলবাড়িয়া গ্রামের রুস্তম আলীসহ পাঁচ জনকে হত্যার অভিযোগে ২০০৯ সালের ২ জুলাই খালেক মণ্ডলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শহীদ রুস্তম আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী।
এ মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট তদন্ত শুরু হয়। মোট ৬০ জনকে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়।
এমএইচডি/এসএসএইচ/জেএস
