পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলার অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী তিন দিনের মধ্যে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৪ ও ১৯ ধারা অনুসরণ করে অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৪ মার্চ) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, পার্বত্য তিন জেলায় অবৈধ ইটভাটা অপসারণের জন্য জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আবেদন করেছিলাম। আদালত সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে সাত দিনের মধ্যে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুসারে জেলা প্রশাসন তা বন্ধ করেনি। দু'চারটি বন্ধ করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। কিন্তু তারা আবার এগুলো চালাচ্ছেন। এসব নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনেছি। পাশাপাশি আদালত আরেকটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, মোট কতটি অবৈধ ইটভাটা আছে এই তিন জেলায় তার তালিকা দাখিলের জন্য। সে তালিকা আজ জেলা প্রশাসন থেকে আদালতে দাখিল করা হয়েছে। যেখানে চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটিতে ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে।
আইনজীবী বলেন, আজ আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশ দিয়েছেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৪ ও ১৯ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এ ধারায় বলা হয়েছে, যারা এরকম অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করবেন তাদের বিরুদ্ধে দুই বছর পর্যন্ত সাজা আছে। ১৩০টি ইটভাটা ছয় সপ্তাহের মধ্যে ভেঙ্গে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
এর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত সব অবৈধ ইটভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং এসব অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় বিভিন্ন ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে এবং পাহাড় কেটে মাটি ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভাটার জ্বালানি হিসেবে বনের গাছ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।
এমএইচডি/জেডএস