যেসব কারণে সরকারি চাকরিতে পোষ্য কোটা বাতিল করা উচিত
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ, বাংলাদেশ রেলওয়েসহ যেসব চাকরিতে পোষ্য কোটা রয়েছে; আমি তার যৌক্তিকতা খুঁজে পাই না। এই যেন ‘তেলা মাথায় তেল দেয়ার’ মতো! ধনীকে আরও ধনী বানানো; আর গরীবকে আরও গরীব বানানোর প্রক্রিয়া! এর মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিক গ্যাপ অনেক বেড়ে যায়।
যে পরিবারে একজন চাকরিজীবী রয়েছে; সেই পরিবার এমনিতেই স্বাবলম্বী। তাহলে, তাদের আবার কেন কোটার মাধ্যমে বাড়তি সুবিধা দিতে হবে? প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ, রেলওয়ে নিয়োগসহ সকল নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা বাতিল হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন : এসএসসি পাসে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডে চাকরির সুযোগ
বাড়তি সুবিধা যদি দিতেই হয়; তাহলে সেটা একজন কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক এই জাতীয় পরিবারের ছেলে-মেয়েকে দেয়া উচিত। কারণ, তাদের পরিবার এসব ছেলে-মেয়েকে অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করিয়েছেন অথবা সেইসব ছেলেমেয়েকে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থাও ততটা ভালো নয়।
একজন চাকরিজীবীর ছেলে-মেয়ে যত সহজে পড়াশোনা সুযোগ পায়; নিশ্চয়ই একজন কৃষক/দিনমজুর/শ্রমিক/রিকশাওয়ালার ছেলে-মেয়ে তত সহজে পড়াশোনা করার সুযোগ পায় না বা হয়ে ওঠে না। তাহলে বাড়তি সুবিধা কাদের পাওয়া উচিত?
আরও পড়ুন : কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে চাকরির সুযোগ
একজন কৃষক/দিনমজুর/শ্রমিক/রিকশাওয়ালার ছেলে-মেয়ে যদি চাকরি পায়; তাহলে সে ওই পরিবারের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি তাদের সাফল্য দেখে অন্যরাও তাদের ছেলে-মেয়েদের কষ্ট করে হলেও পড়ালেখা করাতে উদ্বুদ্ধ হবে।
আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও বলছি- সকল ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা বাতিল করা উচিত। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা বৈষম্য মুক্ত সমাজ চাই। আমরা চাই সমাজে যেন পর্যায়ক্রমে বৈষম্য হ্রাস পায়; বৃদ্ধি নয়।
লেখক- ৩৫তম বিসিএস ক্যাডার, সাবেক সিনিয়র অফিসার (পূবালী ব্যাংক লিমিটেড), প্রতিষ্ঠাতা : BCS Technique (বিসিএস স্পেশাল প্রাইভেট প্রোগ্রাম), লেখক : BCS Preliminary Analysis (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশন ভিত্তিক বিসিএস প্রিলির পূর্ণাঙ্গ বই), প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ Analysis (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশন ভিত্তিক প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ বই)।