বিসিএস লিখিত পরীক্ষা : ইংরেজি অংশে ভালো করার উপায়
শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে ৪১তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইংরেজি সাহিত্য। এতে ভালো করার বিভিন্ন কৌশল নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন সহকারী পুলিশ সুপার মো: রুবেল হক। তিনি ৩৬তম বিসিএসে (সুপারিশ প্রাপ্ত) পুলিশ ক্যাডার পেয়েছেন।
ইংরেজি অংশের নম্বর বণ্টন
পার্ট এ এবং পার্ট বি মিলিয়ে মোট ২০০ নম্বর বরাদ্দ আছে। রিডিং কম্প্রিহেনশন থেকে ১০০ নম্বর। এরমধ্যে সাধারণ প্রশ্নে ৩০, ব্যাকরণে ৩০, সম্পাদকের কাছে চিঠিতে ২০ এবং সারাংশে ২০ নম্বর। পার্ট বি-তে বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ ২৫, ইংরেজি থেকে বাংলা ২৫ এবং রচনায় ৫০ সহ মোট ১০০ নম্বর। সর্বমোট ২০০ নম্বর।
উত্তর দেওয়া শুরু করবেন যেভাবে
ইংরেজি লেখাগুলো উপন্যাসের মত পড়তে হবে। সেখানে বেশি বেশি ব্যাকরণ, ভোকাবুলারি এবং বানানের চর্চা করতে হবে। আগ্রহ নিয়ে করলে সেটা আরও কার্যকরী হবে। খাতায় ইডিয়ম এবং ফ্রেস বেশি বেশি প্রয়োগের চেষ্টা করতে হবে। যেমন Well and good, safe and soul, part and percel, every nock and corner ইত্যাদি। এক্ষেত্রে রঙিন কালি ব্যবহার করতে পারলে আরও ভালো।
এছাড়া Part of Speech সাধারণ ভাবে এক ধরনের অর্থ আর বাক্যে ভিন্ন ধরনের অর্থ বহন করে। যেমন Country (দেশ) - noun, কিন্তু in the country - Adverb এর কাজ করে। অর্থাৎ বাক্যে কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটাও বোঝা দরকার। এতে অনুবাদ চর্চা ভালো হয়। ইংরেজি লেখা ও অনুবাদের সময় কোনও শব্দ বারবার ব্যবহার করা উচিত নয়। বানান এবং ব্যাকরণে ভুল করা যাবে না। যারা ইংরেজিতে দুর্বল তাদের জন্য পরামর্শ থাকবে, নিয়মিতি চর্চা করেন। প্রতিদিন অনুবাদ ও প্যাসেজ চর্চা করেন।
প্যাসেজ নিয়ে সমস্যা? দূর করবেন যেভাবে
ইংরেজি ব্যবহার করতে হবে শুদ্ধ ভাবে, গ্রহণযোগ্যভাবে। প্রথমে বিশ্বাস রাখুন, ইংরেজি ভাষা অনেক সহজ। আপনি ব্যাকরণ পড়ছেন না বরং একটি ভাষা শিখছেন। তাই বিষয়ভিত্তিক এবং ব্যাকরণগত প্রশ্নগুলো দ্রুত পড়ে নিন। গুরুত্বপূর্ণ কিছু পেলে আন্ডারলাইন করে নিতে হবে। ১ম প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার জন্যে প্যাসেজ পড়া উচিত। প্যারা আকারে থাকলে প্রতিটা প্যারা পড়ে বামে একটি শব্দ বা একাধিক শব্দ দিয়ে সারমর্ম প্রশ্নে বা খাতায় লিখে নিতে পারেন। এভাবে ৫/৬টা শব্দ এবং বিশেষ ক্ষেত্রে একাধিক শব্দ ব্যবহার করে অনুচ্ছেদটি নিজের মত আয়ত্ত করে নেন। এতে ১০/১৫ মিনিট সময় লাগে এবং পুরো অনুচ্ছেদটি আয়ত্তে চলে আসে।
যেমন-
১। History/Background/introduction
২। Development of process/kinds
৩। Utilization
৪। Effect / result/impact on civilization and environment
৫। Protection/ Recommendation/ conclution
৬। Future work should be done.
সব কিছু বিবেচনা করে নিজের মতো মনে মনে একটা শিরোনাম ঠিক করে নিন। প্যাসেজ আপনাকে কী তথ্য দিচ্ছে সেটা খুব ভাল ভাবে অনুধাবন করার চেষ্টা করেন। সারমর্ম লিখে ফেলেন । Change of Part of Speech, Sentence adjustment এবং বিরামচিহ্ন নিয়মিত চর্চা করেন। এগুলোতে ভুল করা যাবে না
ভোকাবুলারির সমস্যা সমাধান যেভাবে
আপনার শব্দভাণ্ডার যত বেশি সমৃদ্ধ হবে, ভাষার প্রতি দখল তত আসবে। অনুবাদ তত ভালো পারবেন। ভোকাবুলারি যেকোনো ভাবে পড়া যায়। তবে কোন শব্দ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা পেতে চাইলে বাংলা একাডেমীর ইংরেজি থেকে বাংলা অভিধান দেখবেন। নতুন শব্দ শেখার মাঝে আনন্দ আছে।
লক্ষ্য রাখবেন, অনুচ্ছেদে এমন কিছু থাকে, যেটা সংবাদ মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে দেশের মানুষকে জানানো দরকার। গণসচেতনতা গড়ে তোলা দরকার। সেটাই সম্পাদকের কাছে চিঠি। কয়েক জন মিলে ভালো শব্দ চয়ন করে একটা ফরম্যাট দাঁড় করালে, রুমে প্র্যাকটিস করলে অনেক ভাল নম্বর আসবে।
রচনা অংশের জন্য বিশেষ কৌশল
রচনা অংশ বাংলা ও ইংরেজি প্রায় একই রকম। দুটি রচনাই কমন আসবে। কেবল ভাষা ভিন্ন। তথ্য, চিত্র, মানচিত্র, ছক, কোটেশন, উক্তি, অর্থনৈতিক সমীক্ষা এমন ভাবে দিবেন, যাতে করে আপনার খাতাটা আকর্ষণীয় করে তোলে। সুন্দর উপস্থাপনা আপনাকে এগিয়ে রাখবে।
অনুবাদের ক্ষেত্রে করণীয়
অনুবাদ প্রতিদিন চর্চা করতে হবে। বাজারের গাইড বইগুলোর অনুবাদ চর্চা করলেই যথেষ্ট। পরে সময় পেলে ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকার সম্পাদকীয় অনুবাদ করবেন। তবে এতটা সময় হাতে পাওয়া কঠিন। বড় বড় জটিল বাক্য অনুবাদ খুব সরল বাংলায় করতে ভালো। অনুবাদ মূলত ভাবানুবাদ। প্রয়োজনে আক্ষরিক অনুবাদ করা যায়। অনুবাদ এখন অনেক বড় আসে, তাই সতর্ক থাকবেন পুরোটাই উত্তর করে আসতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে পৃথিবীর সেরা বাক্য না বললেও পৃথিবীর সেরা কাজ করা সম্ভব।
পরীক্ষার্থীদের পরামর্শ
আপনি প্রথম যে বিসিএস দিচ্ছেন সেটাই তো আপনার শেষ বিসিএস নয়। আপনি প্রিলিতে যত ভালো প্রস্তুতি নিবেন, লিখিত পরীক্ষায় ততই এগিয়ে থাকবেন। আবার লিখিত পরীক্ষার ভালো প্রস্তুতি ভাইভাতে এগিয়ে রাখবে।