বিসিএস : স্বপ্ন পূরণের মহারণে স্বাগতম
বিসিএস ক্যাডার হওয়া অনেকের কাছেই স্বপ্নের মত। কদিন বাদেই শুরু হতে যাচ্ছে ৪১ ও ৪২তম বিসিএস পরীক্ষা। ৪১তম বিসিএসে আবেদন করেছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার জন। এ বিসিএসে ২ হাজার ১৬৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ ৪২তম বিসিএসে ৩১ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এতে সহকারী সার্জন হিসেবে ২ হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদিত প্রার্থীর সংখ্যা ও পদ সংখ্যার পার্থক্যটা পরিষ্কার করে দিচ্ছে বিসিএস যুদ্ধ কতটা কঠিন। কৌশলী পড়াশোনা ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রস্তুতি এতে সহায়ক হিসেবে কাজে দেবে। একইসঙ্গে বাতিঘরের মতোই পথ দেখাবে বিভিন্ন সেক্টরে নিয়োগ পাওয়া বিসিএস ক্যাডারদের বাস্তব অভিজ্ঞতা।
৪২ তম বিশেষ বিসিএসের জন্য পরীক্ষা হবে ৩০০ নম্বরের। এর মধ্যে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে। ১০০ নম্বরের হবে মৌখিক পরীক্ষা। প্রিলিমিনারিতে মেডিকেল সায়েন্স (১০০), বাংলা (২০), ইংরেজি (২০), বাংলাদেশ বিষয়াবলী (২০), আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী (২০), মানসিক দক্ষতা (১০) ও গাণিতিক যুক্তির (১০) ওপর পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য প্রার্থী ১ নম্বর পাবেন। তবে ভুল উত্তর দিলে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত মোট নম্বর থেকে দশমিক ৫০ নম্বর কাটা যাবে।
শুরু করা যাক, তকী ফয়সালকে দিয়েই। তিনি ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় অ্যাডমিন ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন। শুধু কি তাই? ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন, কিভাবেই বা সফল হলেন? একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে তকী ফয়সাল জবাব দিলেন, 'নিয়মিত পড়াশোনা করেছি। সময় ধরে নয়, যতক্ষণ পড়েছি মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছি। পড়ার জন্য কোনো বিশেষ সময় বেছে নিইনি। যখন পড়ার ইচ্ছা হতো তখনই পড়তাম। বিসিএস তিনটি পরীক্ষার প্যাকেজ। প্রথমে প্রিলিমিনারি, তারপর লিখিত, সবশেষে ভাইভা। প্রত্যেক পরীক্ষার জন্যই আলাদা আলাদা কৌশল অবলম্বন করেছিলাম। প্রিলিমিনারিতে দুই ঘণ্টায় ২০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। বিষয়টি খুবই কঠিন। এজন্য প্রথমেই সাধারণ জ্ঞানের উত্তর দিয়েছি। কারণ এ বিষয়ে চিন্তাভাবনার কিছু নেই। তথ্য জানা থাকলে কম সময়েই উত্তর দেওয়া যাবে। যেসব বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে উত্তর দিতে হয়, সেগুলো পরে উত্তর করেছি। যেমন-ইংরেজি, বিজ্ঞান। সবশেষে দিয়েছি গণিত।'
একটু থেমে আবারও তিনি বলেন, প্রিলিমিনারিতে টিকে যাওয়ার পরে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। প্রস্তুতির একটি বড় অংশজুড়ে ছিল কিভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায়। বাসায় লেখার চর্চা করেছিলাম বলেই সব পরীক্ষায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করতে পেরেছিলাম। বানানের দিকে সতর্ক থেকেছি, অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা করিনি। প্রশ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চিত্র, গ্রাফ, পরিসংখ্যান, বিভিন্ন মনীষীর উক্তি, উদ্ধৃতি, সংজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। গুরুত্বপূর্ণ শব্দ বা বাক্য মার্ক করার জন্য নীল কালি ব্যবহার করেছি। প্রতিটি উত্তরের সঙ্গে নিজস্ব মতামত দিয়েছি, তথ্যের রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেছি বিভিন্ন বই ও পত্রপত্রিকার নাম। আমার মনে হয় এসব কারণেই ভালো নম্বর পেয়েছিলাম।'
আলোচনার ফাঁকে আপনাদের জানিয়ে রাখি ৪২তম বিসিএস পরীক্ষার নম্বর বণ্টন। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৪২ তম বিশেষ বিসিএসের জন্য পরীক্ষা হবে ৩০০ নম্বরের। এর মধ্যে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে। ১০০ নম্বরের হবে মৌখিক পরীক্ষা। প্রিলিমিনারিতে মেডিকেল সায়েন্স (১০০), বাংলা (২০), ইংরেজি (২০), বাংলাদেশ বিষয়াবলী (২০), আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী (২০), মানসিক দক্ষতা (১০) ও গাণিতিক যুক্তির (১০) ওপর পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য প্রার্থী ১ নম্বর পাবেন। তবে ভুল উত্তর দিলে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত মোট নম্বর থেকে দশমিক ৫০ নম্বর কাটা যাবে।
হালিমুল হারুন। ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বিএসসি পরীক্ষার আগ মুহূর্তে কিভাবে পড়াশোনা করেছিলেন? উত্তরে তিনি বলেন, 'বিসিএস পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে মডেল টেস্টের বই সংগ্রহ করেছিলাম। ঘরে বসে মডেল টেস্ট দিতাম। টার্গেট থাকত প্রত্যেকটি পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মধ্যে শেষ করা। পরে ভুলগুলো খুঁজে বের করে সংশোধন করতাম। শেষের দিকে এসে দেখতাম, ভুল কম হচ্ছে। তখন আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। আর লিখিত পরীক্ষার আগে ইংরেজির জন্য নবম-দশম শ্রেণির গ্রামার বই সংগ্রহ করে খুঁটিনাটি বিষয় পড়েছি। চেষ্টা করেছি ইংরেজিতে ফ্রি হ্যান্ড রাইটিংয়ের স্কিল বাড়াতে। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়তাম। বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার ইংরেজি অংশ সমাধানের চেষ্টা করতাম। বাংলায় ভালো নম্বর তোলার একটি কৌশল হচ্ছে বানান ভুল না করা। বানান ও ব্যাকরণ চর্চার জন্য আলাদা সময় রাখতাম। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্য বইয়ের সাহিত্য ও ব্যাকরণ অংশ পড়তাম। কবি, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিকের সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে জেনেছি।'
ভাইভার জন্য পোশাক-পরিচ্ছদ, মানসিক প্রস্তুতি ও সাধারণ জ্ঞান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিনয়ের সঙ্গে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। অস্পষ্ট, ভুল উত্তর বা কথায় আঞ্চলিকতার প্রভাব প্রশ্নকর্তাদের বিরক্ত করে। কৌশলে বোর্ডকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব। উদাহরণ দিয়ে বলি, বোর্ডে এমন অনেক প্রশ্ন করা হয়, যার উত্তর বিভিন্নভাবে দেওয়া যায়। উত্তরে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো জানেন, তা যোগ করার চেষ্টা করুন। যেমন—আপনাকে ১৯৭১ নিয়ে বলতে বলা হলো, কিন্তু আপনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন নিয়ে বিস্তর জানেন। উত্তরে যদি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পত্তন হয়েছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই। তখন দেখা যাবে, বোর্ড সদস্যরা আপনাকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন।'
ওবায়দুল ইসলাম খান, ২৯তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডার
হালিমুল হারুন বলেন,' বিখ্যাত ব্যক্তির উক্তি পেলেই নোট করে রাখতাম। পরীক্ষার খাতায় সংশ্লিষ্ট উক্তি লিখেছি। এটি লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে সহায়তা করেছে বলে আমার ধারণা। একটি বিষয়ে অযথা সময় নষ্ট করার পক্ষপাতী ছিলাম না। পড়ার সময় কোনো টপিক কঠিন মনে হলে তা রেখে দিয়ে অন্য বিষয় পড়তাম।'
'লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নের সিরিয়াল অনুসারে উত্তর দিয়েছিলাম। এতে পরীক্ষক বিরক্ত হন না। নম্বর পাওয়ার জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের শিরোনাম লেখার সময় নীল কালির কলম ব্যবহার করেছি। খাতা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করেছি। প্রয়োজনীয় গ্রাফ ও চিত্র এঁকে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছি। অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখিনি। আমার মনে হয়, ভালো নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে এসব খুব কাজে দিয়েছে।'- যোগ করেন হালিমুল হারুন।
স্বাভাবিক ভাবেই বিসিএস পরীক্ষার্থীদের মাথায় ঘোড় পাক খায়, কেমন হয় বিসিএস ভাইভা পরীক্ষা? সেখানে কি করলে সফল হওয়া যায়? এমন একগাদা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ২৯তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া ওবায়দুল ইসলাম খান। বিসিএস ভাইভা বোর্ডে তাকে মুখোমুখি হতে হয়েছিল বেশ কিছু কঠিন ও কৌশলী প্রশ্নের। মনের আগল খুলে সেসব প্রশ্ন ও উত্তর তিনি বাতলে দিয়েছেন ঠিক এই ভাবে- ' ভাইভা বোর্ডের প্রথম প্রশ্নটি ছিল-তোমার জন্ম তারিখ ইংরেজিতে বলো। আমি উত্তর দিয়েছিলাম টোয়েন্টিফোর্থ অক্টোবর নাইনটিন এইট্টি। উত্তর শুনে প্রশ্নকর্তা বললেন, তোমার জন্ম তারিখটি আবার বলো। দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গেই আমি ভুল বুঝতে পেরে সঠিক উত্তরটি দিয়েছিলাম। বললাম, টোয়েন্টিফোর্থ অক্টোবর নাইনটিন হান্ড্রেড অ্যান্ড এইট্টি। নিজের ভুল সংশোধন করে দ্রুত সঠিক উত্তর দিতে পারায় ভাইভা বোর্ড আমার ওপর খুশি হয়েছিল। এটি পরের সাত-আট মিনিট খুব কাজে দিয়েছে। দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে বিসিএস জেনারেল ক্যাডারে কেন আসতে চাচ্ছি?
বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় মনে হয়েছিল, বুয়েটে পড়লে আমার জন্য ভালো হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার চেয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়ে জনগণকে বেশি সেবা করার সুযোগ পাব। তৃতীয় প্রশ্নটি ছিল-ভারত, মিয়ানমার ও চীনের সঙ্গে আমাদের ভূ-রাজনীতি কেমন হওয়া উচিত-এটি ইংরেজিতে বলো। আমি বলেছিলাম, আমাদের দেশের তিন দিকেই ভারত। যদিও ভারতের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ রয়েছে। তার পরও নিজেদের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। উদাহরণ দিয়ে বলেছিলাম, আজ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে কাল থেকে দেশে পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি হবে। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এটি দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করছি। অন্যদিকে চীন আমাদের অনুদান দেয় সত্যি, তার পরও চাইলে খানিকটা চীনকে এড়িয়ে চলা সম্ভব। কারণ দেশটি আমাদের থেকে দূরে। আমার উত্তর শুনে প্রশ্নকর্তা খুশি হয়েছিলেন।
প্রিলিমিনারিতে টিকে যাওয়ার পরে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। প্রস্তুতির একটি বড় অংশজুড়ে ছিল কিভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায়। বাসায় লেখার চর্চা করেছিলাম বলেই সব পরীক্ষায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করতে পেরেছিলাম। বানানের দিকে সতর্ক থেকেছি, অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা করিনি। প্রশ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চিত্র, গ্রাফ, পরিসংখ্যান, বিভিন্ন মনীষীর উক্তি, উদ্ধৃতি, সংজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। গুরুত্বপূর্ণ শব্দ বা বাক্য মার্ক করার জন্য নীল কালি ব্যবহার করেছি। প্রতিটি উত্তরের সঙ্গে নিজস্ব মতামত দিয়েছি, তথ্যের রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেছি বিভিন্ন বই ও পত্রপত্রিকার নাম। আমার মনে হয় এসব কারণেই ভালো নম্বর পেয়েছিলাম।'
তকী ফয়সাল, ৩৭তম বিসিএসে অ্যাডমিন ক্যাডারে প্রথম
সব শেষে জিজ্ঞেস করেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কত? আমি বলেছিলাম, ১২ বিলিয়ন ডলার। উত্তর শুনে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন-টাকায় কত হয়? জবাব দিয়েছিলাম, স্যার কনভার্শন রেট ৮০ দিয়ে গুণ দিলেই হয়। নিজের ভুল বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গেই বোর্ডের সদস্যদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম। কারণ তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন ১২ বিলিয়ন ডলারে বাংলাদেশি টাকায় কত হয়? আমার কাছে মনে হয়েছে, বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর ও বিনয়ী আচরণের জন্যই সেবার পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছিলাম।
নতুনদের উদ্দেশে ওবায়দুল ইসলাম খান বলেন, 'ভাইভার জন্য পোশাক-পরিচ্ছদ, মানসিক প্রস্তুতি ও সাধারণ জ্ঞান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিনয়ের সঙ্গে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। অস্পষ্ট, ভুল উত্তর বা কথায় আঞ্চলিকতার প্রভাব প্রশ্নকর্তাদের বিরক্ত করে। কৌশলে বোর্ডকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব। উদাহরণ দিয়ে বলি, বোর্ডে এমন অনেক প্রশ্ন করা হয়, যার উত্তর বিভিন্নভাবে দেওয়া যায়। উত্তরে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো জানেন, তা যোগ করার চেষ্টা করুন। যেমন—আপনাকে ১৯৭১ নিয়ে বলতে বলা হলো, কিন্তু আপনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন নিয়ে বিস্তর জানেন। উত্তরে যদি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পত্তন হয়েছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই। তখন দেখা যাবে, বোর্ড সদস্যরা আপনাকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন।'
সবশেষ আবারও বলতে হয়, কণ্টকাকীর্ণ এই পথে সাফল্য পেতে গেলে দিগভ্রস্ট নয়, আগাতে হবে নির্ধারিত কৌশলে। অতঃপর স্বপ্ন পুরণের এই মহারণে আপনাকে জানাই সাদোর আমন্ত্রণ।