রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাট্টা পশ্চিম, যুদ্ধের শঙ্কা
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী দুই অঞ্চল দনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন ঘোষণার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেখানে রুশ সৈন্য মোতায়েনের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। গত কয়েক মাস ধরে চলে আসা ইউক্রেন সংকট ঘিরে যুদ্ধের আবহ তৈরি হলেও রাশিয়া বলছে, তারা যেকোনও কঠিন মুহূর্তেও শান্তি আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি।
রাশিয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। যেকোনও ধরনের পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে কড়া জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন বিশ্ব নেতারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি
‘আমরা শান্তি এবং কূটনৈতিক পথের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা এই পথ অনুসরণ করব এবং কেবল এটিই করব। আমরা নিজেদের ভূমিতে আছি। আমরা কোনও কিছু এবং কাউকে ভয় পাই না। আমরা কাউকে পরোয়া করি না, কাউকে কোনও কিছু দেব না।’
‘আমাদের অংশীদারদের কাছ থেকে পরিষ্কার এবং ফলপ্রসূ পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি। কারা আমাদের প্রকৃত বন্ধু এবং অংশীদার, সেটি দেখাই এখন গুরুত্বপূর্ণ।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রুস
‘‘প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘গণপ্রজাতন্ত্রী দনেৎসক’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী লুহানস্ককে’ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে মিনস্ক চুক্তির প্রতি রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি পরিষ্কারভাবে লঙ্ঘন করেছেন। এই পদক্ষেপ মিনস্ক শান্তি চুক্তি শেষের বার্তা দিচ্ছে।’’
‘এর মাধ্যমে সংলাপের পরিবর্তে রাশিয়া যে সংঘাতের পথ বেছে নিয়েছে সেটি বোঝা যাচ্ছে। মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা জবাব দেব। আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের দায়ে রাশিয়াকে সাজা পেতে হবে।’
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি
‘আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে এ ধরনের একটি পদক্ষেপ আশঙ্কা করেছি এবং আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এর জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
পূর্ব ইউক্রেনের দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রাশিয়া স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পর অঞ্চল দু’টির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীকেও নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ
‘মস্কো ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সবসময় আর্থিক এবং সামরিক সহায়তা সরবরাহের মাধ্যমে সংঘাতে জ্বালানি জুগিয়েছে। রাশিয়া আবারও সেখানে আগ্রাসন চালানোর জন্য একটি মঞ্চ তৈরির চেষ্টা করছে।’
এটি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সংঘাতের সমাধানে শান্তি প্রচেষ্টা এবং মিনস্ক শান্তি চুক্তির লঙ্ঘন।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জলি
আন্তর্জাতিক আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘনের দায়ে অংশীদার এবং মিত্রদের নিয়ে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া দেখাবে কানাডা। এই পদক্ষেপের জন্য আমরা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মু জায়ে-ইন
‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি অবশ্যই সম্মান করতে হবে। আমাদের সক্রিয়ভাবে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে হবে।’
‘এটা শুধু ইউরোপ নয়, বরং সারা বিশ্বের ওপর ভয়াবহ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে।’
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরিস পাইনি
পূর্ব ইউক্রেনের দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রাশিয়ার স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণার নিন্দা জানাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। এটি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনে এর কোনও বৈধতা নেই।
জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুন
সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অবশ্যই সংযত হতে হবে। উত্তেজনায় জ্বালানি জোগাতে পারে, এমন পদক্ষেপ এড়াতে হবে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস