ঝড় ইউনিসের আঘাতে ইউরোপে নিহত ৯
আটলান্টিক মহাসাগরে উদ্ভূত ঝড় ইউনিসের আঘাতে ইউরোপে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে; এছাড়া ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার গুরুতর ক্ষতি হওয়ায় উত্তরপশ্চিম ইউরোপের ১০ লাখেরও মানুষ বর্তমানে আছেন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়।
যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার যুক্তরাজ্যের দক্ষিনপশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা কর্নওয়ালে আছড়ে পড়ে ইউনিস। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশের ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যাওয়ার সময় কোনো কোনো এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২২ মাইলেরও বেশি ছিল।
ব্রিটেনের গত কয়েক দশকের ইতিহাসের ইউনিসের মতো এত বড় ও শক্তিশালী ঝড় দেখা যায়নি বলে রয়টার্সকে উল্লেখ করেছেন দেশটির আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তারা।
রয়টার্সের অনুসন্ধানে জানা গেছে, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ডস, নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামে ঘটেছে নিহতের ঘটনাসমূহ। অধিকাংশই মারা গেছেন মাথার ওপর গাছ ভেঙে পড়ায়।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে একটি গাড়ির ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় গাড়ির ভেতরে থাকা এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় হ্যাম্পশায়ারে ভেঙে পড়া গাছের সঙ্গে গাড়ির সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে আর এক ব্যক্তির।
নেদারল্যান্ডসে মাথার ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। বেলজিয়ামে একটি হাসপতালের ছাদ ধসে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের, আরেকজন মারা গেছেন নৌকাডুবিতে।
এছাড়া আয়ারল্যান্ডে ঝড়ের ফলে সৃষ্ট আবর্জনা পরিষ্কারের সময় গাছ ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে একজনের।
বাতাসের প্রবল বেগ ও ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যসহ উত্তরপশ্চিম ইউরোপের কয়েকটি দেশের বেশ কিছু এলাকায় গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। বর্তমানে ইউরোপের ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা রেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ঝড়ো হাওয়ার কারণে মোট ৪৩৬ টি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে দেশটি। এছাড়া ডোভার ও ক্যালিস নদী নৌ পরিবহন ব্যবস্থা স্থগিত করা হয়েছে।
ঝড়ের কবলে পড়া অপর দেশ নেদারল্যান্ডসও বাতিল করেছে ৩৯০ টি ফ্লাইট।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ড্যামিয়েন হাইন্ডস জানিয়েছেন, ঝড়ে উপদ্রুত মানুষজনকে সহায়তা করতে ইতোমধ্যে দেশের সেনা বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দেশবাসীকে ধৈর্য্য ধারণের পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার তার সাধ্যমত চেষ্টা করছে। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত হবে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরামর্শ মেনে চলা ও নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা।’
এসএমডব্লিউ