নিজস্ব করোনা টিকার ট্রায়াল শুরু করল ইন্দোনেশিয়া
নিজেদের তৈরি করোনা টিকা ‘মেরাহ পুতিহ’র ট্রায়াল শুরু করেছে ইন্দোনেশিয়া। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
ইন্দোনেশীয় ভাষায় মেরাহ পুতিহ শব্দের অর্থ লাল-সাদা। জাতীয় পতাকার রঙের নামে নামকরণ করা এই টিকা যৌথভাবে তৈরি করেছে দেশটির আইরলাঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয় ও বায়োটিস ফার্মাসিউটিক্যালস নামের একটি ইন্দোনেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি।
২০২০ সালেই নিজেদের উদ্যোগে করোনা টিকা তৈরির প্রকল্প শুরু করেছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার। পরে নানা কারণে সেই প্রকল্পের কাজ পিছিয়েছে; কিন্তু এবার দেশটির সরকার প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে মনযোগী হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা এএফপিকে বলেছেন, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই বাজারে আসবে মেরাহ পুতিহ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুনাদি সাদিকিন জানিয়েছেন, তিন থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদেরও দেওয়া যাবে এই টিকা। সরকারি ছাড়পত্র পাওয়ার পর জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতেও ব্যবহার করা হবে এটি।
পাশপাশি, টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার জন্য পর্যাপ্ত টিকা যেসব দেশের কাছে নেই, সে দেশগুলোতে এই টিকা পাঠানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে উল্লেখ করে বুধবার ট্রায়াল শুরুর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি এবং তিনি দরিদ্র দেশগুলোতে বিনা মূল্যে এই টিকাটি পাঠানোর ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিকার প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে ৯০ জন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেবেন। আইরলাঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন মোহাম্মদ নাসিহ এএফপিকে জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা উলেমা কাউন্সিল ইতোমধ্যে মেরাহ পুতিহ টিকাকে ‘হালাল’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
নাসিহ বলেন, ‘আমরা আশা করছি, উলেমা কাউন্সিলের স্বীকৃতি এই টিকাটির সম্পর্কে জনমনে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করবে।’
জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য এ পর্যন্ত ১৩ টি করোনা টিকার অনুমোদন দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। তবে দামে তুলনামূলকভাবে সস্তা হওয়ায় জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে প্রধানত ব্যবহার করা হয়েছে চীনের করোনা টিকা।
২৭ কোটি মানুষ অধ্যুষিত এই দেশটির বেশিরভাগ জনগণকে টিকার আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় টিকার ডোজ কেনার মতো যথেষ্ট অর্থও নেই দেশটির কাছে।
এ কারণে দেশের অধিকাংশ জনগণকে টিকার আওতায় আনা ও হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে নিজেদের উৎপাদিত টিকার ওপর নির্ভর করা ছাড়া আপাতত ইন্দোনেশিয়ার সামনে কোনো পথ নেই।
সূত্র: এএফপি
এসএমডব্লিউ