ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার হামলা চালাতে প্রস্তুত রাশিয়া, বলছে ওয়াশিংটন
ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযান চালাতে প্রয়োজনীয় সামরিক সক্ষমতার প্রায় ৭০ শতাংশই সীমান্তে জড়ো করেছে রাশিয়া। এছাড়া প্রতিবেশি এই দেশটির সীমান্ত এলাকায় আরও কৌশলগত সামরিক ব্যাটালিয়নকে মোতায়েন করছে মস্কো। শনিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সংবেদনশীল তথ্যের কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, গত দুই সপ্তাহে ইউক্রেনের সীমান্ত অঞ্চলে কৌশলগত সামরিক ব্যাটালিয়নের সংখ্যা শুক্রবার পর্যন্ত ৬৩ থেকে বাড়িয়ে ৮৩ করেছে রাশিয়া। আরও ১৪টি ব্যাটালিয়ন ইউক্রেন সীমান্তে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
তারা বলেছেন, আক্রমণের সম্ভাব্য সময় ১৫ ফেব্রুয়ারির আশপাশে। সেই সময় ওই অঞ্চলে বরফ মাটিতে পড়ে জমে যেতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এর ফলে রাশিয়ার আরও সামরিক ইউনিট ও সরঞ্জাম সেখানে পরিবহন করা সহজ হবে। আর এ ধরনের পরিস্থিতি আগামী মার্চের শেষ পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে।
এই সময়কাল ও ইউক্রেনের সীমান্ত এলাকায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সংকট সমাধানে কূটনীতির পথ বন্ধ করে দিতে পারে। তবে সীমান্তে রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যাপারে কোনও প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেননি মার্কিন কর্মকর্তারা।
ইউক্রেনের সীমান্ত এলাকায় রাশিয়া এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি সৈন্য সমাবেশ করেছে। সীমান্ত সৈন্য সমাবেশ ঘটালেও দেশটি বলছে, ইউক্রেনে হামলা চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের। তবে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদান বাতিল করা না হলে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে দেশটিতে অজানা সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনাও নাকচ করে দেয়নি মস্কো।
যদিও ওয়াশিংটন এবং ন্যাটো বলছে, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের অধিকার রয়েছে। এ নিয়ে মস্কো যে দাবি করেছে তা অগ্রহণযোগ্য।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক আগ্রাসনের পরিবর্তে অন্য কোনও উপায় রাশিয়া বেছে নেবে বলে বিশ্বাস করে ওয়াশিংটন। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করেন না তারা।
তবে তারা বলেছেন, পুতিন এমন সামরিক সক্ষমতা জড়ো করেছেন; যা যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ আক্রমণ করে, তাহলে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে শহরটির পতন ঘটবে। এছাড়া পুরো-মাত্রার আক্রমণে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে মার্কিন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা অনুযায়ী— রাশিয়া হামলা চালালে ইউক্রেনের ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার সৈন্য মারা যেতে পারে। রাশিয়ার ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার সৈন্যের প্রাণহানি ঘটতে পারে। এছাড়া বেসামরিক প্রাণহানি ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত হতে পারে।
ওয়াশিংটনের বিশ্বাস, পুরো মাত্রার হামলা হলে ইউক্রেনের লাখ লাখ মানুষ শরণার্থী হতে পারেন। এর ফলে ইউক্রেনে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের ইউরোপমুখী ঢল শুরু হতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস