বেঁকে বসা প্রেমিককে কবজা করে এতিম তরুণীর বিয়ে দিল পুলিশ
শীতের রাতে ডিজে বাজছে। পুলিশকর্মীদেরও নাচতে দেখা যাচ্ছে। অন্য সময় হলে পুলিশের এই কাজ নিয়ে শোরগোল উঠত। কিন্তু বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতের চিত্র ছিল একটু আলাদা। ডিজে বাজিয়ে পুলিশের উদ্যোগে বিয়ে হলো এতিম তরুণী সোনাদেবী সিংয়ের।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বিহারের কাটিহার জেলার বাসিন্দা সোনাদেবী সিং কুমেদপুর এলাকার একটি খই তৈরির কারখানায় কাজ করেন। সেই কারখানাতেই থাকতেন তিনি। ২৩ বছরের সোনাদেবীর বাবা-মা অনেকদিন আগে মারা গেছেন।
ওই একই কারখানার শ্রমিক বিহারেরই দারভাঙ্গা জেলার শংকর সাহানি নামে ২৫ বছরের এক যুবক। মাস ছয়েক ধরে দুই জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে। এতিম সোনাদেবী প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন। তাকে বিয়ে করার জন্য শংকরকে বারবার বলতে থাকেন। কিন্তু হঠাৎ বেঁকে বসেন শংকর। বিয়েতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি।
অবশেষে কুমেদপুর পুলিশ আউট পোস্টে ছুটে আসেন সোনাদেবী। ঘটনাটি পুলিশকর্মীদের জানান। এরপর পুলিশ ধরে আনে শংকরকে। জেরায় সোনাদেবীর সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকারও করেন শংকর। এরপরেই তাদের বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় পুলিশ।
সিঁদুর দান থেকে মালাবদল সব রীতি মেনে এলাকার এক কালী মন্দিরে সোনাদেবী আর শংকরের চার হাত এক হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস-সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা। ডিজে বাজিয়ে মিষ্টি মুখ করে সোনাদেবীর বিয়ে দেন তারা।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস জানিয়েছেন, ওই তরুণীর বাবা-মা নেই। একেবারে এতিম। তিনি কাঁদতে কাঁদতে কুমেদপুর আউটপোস্টে এসে তার প্রেমের ঘটনা জানান। ওই যুবকও এই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। এরপরেই পুলিশের উদ্যোগে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।
পুলিশের এই অভিভাবকের ভূমিকায় খুব খুশি এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় আবদুল মতিন ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই যুবক-যুবতীর মধ্যে গত ছয় মাস ধরে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ছেলেটি মেয়েটিকে বিয়ে করছিল না। শেষ পর্যন্ত পুলিশই তাদের বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। পুলিশ দেখে সবাই ভয় করে। কিন্তু পুলিশও যে কখনো কখনো অভিভাবকের মতো কাজ করে তা এই ঘটনা প্রমাণ করল।
এইচকে