ওমিক্রন: বিধিনিষেধ তুলতে তাড়াহুড়ো না করার আহ্বান ডব্লিউএইচওর
করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রন বিশ্বের প্রায় সবদেশে ছড়িয়ে পড়লেও অনেক দেশে এখনও এই ভাইরাসটির সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
এই পরিস্থিতিতে মহামারির ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে ওমিক্রন বিষয়ক বিধিনিষেধ শিথিলের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
মঙ্গলবার এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচওর টেকনিক্যাল বিভাগের প্রধান মারিয়া ভ্যান কারখোভ বলেন , ‘বিশ্বের অনেক দেশ এখনও ওমিক্রন সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। বহু দেশে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে এবং সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা লোকজন এখন পর্যন্ত করোনা টিকার কোনো ডোজ পাননি।’
‘এ কারণে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে- এখনই করোনা বিষয়ক সব বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের সময় আসেনি। সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে আমাদের আহ্বান- বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করবেন না।’
গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর অকল্পনীয় দ্রুত গতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ওমিক্রন। এই ভাইরাসটির দাপটে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।
কিন্তু অতিমাত্রায় সংক্রামক হলেও ওমিক্রন আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মৃত্যুর হার কম থাকায় যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশ ইতোমধ্যে অধিকাংশ করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। অবশ্য এই তালিকায় থাকা দেশগুলোর অধিকাংশ জনগণই ইতোমধ্যে টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।
বুধবারের ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুসও। তিনি জানান, ওমিক্রন অপেক্ষাকৃত কম প্রাণঘাতী হওয়ায় ঢালাওভাবে বিভিন্ন দেশের বিধিনিষেধ শিথিলে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন।
এ বিষয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘দৈনিক সংক্রমণ বাড়লে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়বে- এই সত্য অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা কোনো রাষ্ট্রকে লকডাউনে ফিরে যেতে বলছি না; কেবল বলতে চাইছি- যেহেতু বিশ্ব এখনও মহামারিমুক্ত হয়নি, তাই জনগণকে নিরাপদ রাখতে শুধু টিকার ওপর অতিরিক্ত ভরসা করা উচিত হবে না। সংক্রমণ প্রতিরোধে অন্যান্য যেসব উপকরণ রয়েছে- সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা এখনও ফুরিয়ে যায়নি।’
‘তাই যেসব দেশ টিকাদান কর্মসূচির ব্যাপ্তিকে গুরুত্ব দিয়ে যাবতীয় করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করছে- আমাদের মতে সংক্রমণের এই পর্যায়ে এটি খুবই অপরণিত একটি সিদ্ধান্ত।’
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ