এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা বুঝে নিল টাটা গ্রুপ
গত বছর অক্টোবরে ভারতের সরকারের কাছ থেকে বিমান পরিষেবা সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া কিনে নিয়েছিল টাটা গ্রুপ। কথা ছিল, ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের পরের দিন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই সংস্থার মালিকানা হস্তান্তর করা হবে টাটা গ্রুপের কাছে।
সেই অনুযায়ী, ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা বুঝিয়ে দিয়েছেন টাটা গ্রুপের চ্যায়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরানকে। এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে চন্দ্রশেখরান বলেন, ‘এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা ফিরে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটি যেন একটি বিশ্বমানের বিমান পরিষেবা সংস্থা হয়ে ওঠে- সেজন্য আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে।’
ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বেসরকারিকরণ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নিয়ন্ত্রণ দফতরের সচিব তুহিন কান্ত পান্ডে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, ভারতের বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়াকে বেসরকারি খাতে হস্তান্তরও সে রকমই একটি পদক্ষেপ।
১৯৩২ সালে টাটা গোষ্ঠীরই হাত ধরে যাত্রা শুরু হয়েছিল ভারতের প্রথম বিমান সংস্থা টাটা এয়ারলাইন্সের। ভারতের প্রথম পাইলট জে আর ডি টাটা প্রতিষ্ঠিত সেই টাটা এয়ারলাইন্সের নাম বদলে ১৯৪৬ সালে হয় এয়ার ইন্ডিয়া (এআই)। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর ১৯৫৩ সালে রাষ্ট্রায়ত্তকরণের মাধ্যমে এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা চলে যায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে।
তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে দেনার ভারে জর্জরিত অবস্থায় আছে এয়ার ইন্ডিয়া। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হিসেবে অনুযায়ী, এয়ার ইন্ডিয়ার মোট ঋণের পরিমাণ ৬১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় গত বছর সেপ্টেম্বরে এয়ার ইন্ডিয়াকে বেসরকারি খাতে দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করে কেন্দ্রীয় সরকার। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চলে সেসব দরপত্রের মূল্যায়ন। তখনই টাটা গ্রুপের ১৮ হাজার কোটি টাকার দরপত্রটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্র জানিয়েছে, নিলামে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন ভারতের অপর বিমান পরিষেবা সংস্থা স্পাইসজেটের মালিক অজয় সিং। তার দরপত্র ছিল প্রায় ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার।
ঋণগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার মোট ১২৭টি উড়োজাহাজ রয়েছে। বর্তমানে ভারতের অভ্যন্তরীণ রুটসমূহের পাশাপাশি ৪২ টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে যায় এই বিমানগুলো।
সরকারি এই বিমান পরিষেবা সংস্থার মালিকানা লাভের মাধ্যমে ভারতের মোট ৪,৪০০টি অভ্যন্তরীণ এবং ১,৮০০টি আন্তর্জাতিক অবতরণ এবং পার্কিং স্লটের পাশাপাশি বিদেশি বিমানবন্দরে ৯০০ স্লটের নিয়ন্ত্রণ পেল টাটা গোষ্ঠী।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ