টিকা না নিলে ‘গ্রেফতারের হুঁশিয়ারি’ দুতার্তের
ফিলিপাইনে এখনও যারা টিকা নেননি, তাদের বাড়িতে থেকে বের না হতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। পাশাপাশি হুমকি দিয়েছেন, সরকারের এই নির্দেশ যারা অমান্য করবেন, তাদের গ্রেফতার করা হবে।
বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দুতার্তে বলেন, টিকা না নেওয়া লোকজন যেন বাড়ি থেকে বাইরে বের হচ্ছে কি না- সেদিকে নজর রাখতে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘যদি কোনো টিকা না নেওয়া ব্যক্তি সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বাড়ির বাইরে ঘুরতে বের হয়, তাহলে প্রথমে তাকে আটকানো হবে। তারপরও যদি তিনি কথা না মানেন, সেক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবেন।’
করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ফিলিপাইনেও প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ২২০ জন, যা গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বরের পর ফিলিপাইনে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড।
২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে করোনায় মোট সংক্রমণ-মৃত্যুতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, তারপরই দ্বিতীয় স্থানে আছে ফিলিপাইন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরের মহামারিতে ফিলিপাইনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ৯১ লাখ ৬৬৯ জন এবং এই রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৫১ লাখ ৮৭১ জনের।
বৃহস্পতিবারের ভাষণে দুতার্তে বলেন, ‘আমাকে কঠোর হতে হচ্ছে, কারণ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তার দায় আমার।’
২০২১ সালে ফিলিপিন্সের ৪ কোটি ৯৮ লাখ মানুষ কোভিড টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন। ফিলিপাইনের মোট জনসংখ্যা ১১ কোটি এবং শতকরা হিসেবে দেশটির মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।
এখনকার নিয়ম অনুযায়ী, ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা অঞ্চলে টিকা না নেওয়ারা কেবল জরুরি প্রয়োজনেই ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন। তবে নতুন নিয়ম জারি হলে দেশের সর্বত্রই এই ব্যবস্থা জারি হবে।
উল্টোপাল্টা কথা বলার জন্য অবশ্য দুতের্তের খ্যাতি আছে। গত বছর তিনি টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানানোদের জেলে পাঠানো, অথবা শরীরে পশু চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
তবে তার সাম্প্রতিক হুমকিতে কোভিড-১৯ এর ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ফিলিপিন্সের সরকার যে বেশ উদ্বিগ্ন, তাই প্রকাশ পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি করবে বলেও আশঙ্কা তাদের।
ফিলিপাইনে এখন পর্যন্ত অন্য দেশ থেকে আসা ও স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত মিলিয়ে ওমিক্রনে আক্রান্ত ৪৩ জন শনাক্ত হয়েছে, যা দেশটির সরকারকে নতুন বিধিনিষেধের দিকে ধাবিত করেছে।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ